• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

‘জেলখানা আমার শ্বশুরবাড়ি, থানা বাপের বাড়ি, ধইর‍্যা নিক সমস্যা নাই!’

ফরিদপুর প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ১৫ মে ২০২৫

আপডেট: ১৯:১৩, ১৫ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
‘জেলখানা আমার শ্বশুরবাড়ি, থানা বাপের বাড়ি, ধইর‍্যা নিক সমস্যা নাই!’

“পুলিশে দিছে তো কি হইছে, আমার একগাছ বা.. ছিড়া গ্যাছে! জেলখানা আমার শ্বশুরবাড়ি, থানা আমার বাপের বাড়ি; ধইর‍্যা নিয়ে যাক সমস্যা নাই।”

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কমিশনের বিনিময়ে প্রাইভেট সেন্টারে ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আটকের পর জেল থেকে বেরিয়ে এমনই দম্ভোক্তি প্রকাশ করেছে হেলেনা বেগম (২৭) নামের এক নারী দালাল। মাত্র ২৭ বছর বয়সী হেলেনার দশাসই চেহারার এমন বাচনভঙ্গি এখন ভাইরাল ফেসবুকে।  গোটা শহর জুড়ে, এমনকি জেলা ছাড়িয়ে বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের মানুষের কাছে এখন এক আতঙ্কের নামে।

গত ২০ এপ্রিল ফমেক হাসপাতালের এ ব্লকের সামনে থেকে স্থানীয়রা তাকে ভুয়া পরিচয়পত্র সহকারে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। সপ্তাহখানেক না যেতেই বেরিয়ে এসেছে সে।

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সাদ্দাম হোসেন কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত এক লিখিত অভিযোগে জানান, বিভিন্ন সময়ে হেলেনা ফমেক হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবীর একটি ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করে হেলেনা দীর্ঘদিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনদের সাথে প্রতারণা করে অনৈতিক সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছিলো। তাকে বারণ করলেও সে শুনতো না। এ অবস্থায় গত ২০ এপ্রিল ডিউটিরত পুলিশ ও আনসারের উপস্থিতিতে স্থানীয় জনতা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।
কোতোয়ালি থানার এসআই পীযুষ কান্তী হালদার জব্দ তালিকামূলে হেলেনাকে আটক করে আদালতে চালান করেন।

তবে জেল থেকে বেরিয়ে যেনো আনো বেপরোয়া হেলেনা। সাংবাদিকদের নিকট এখন সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে তার উল্টো অভিযোগ। খুবই স্বাভাবিক ঢংয়ে হাসতে হাসতে হেলেনা  বলে- ‘আমি জিজ্ঞেস করছি তোমরা কারা? বললো সমন্বয়ক। আমিতো চিনিনা। বললো- এক লাখ টাকা দিবা, নইলে ধইর‍্যা নিয়ে যাবো।”

একথা বলেই হুঙ্কার দিয়ে ছাড়ে হেলেনা। বলে- “এই জেলখানা আমার শ্বশুরবাড়ি, থানা আমার বাপের বাড়ি; ধইর‍্যা নিয়ে যাক সমস্যা নাই।” 

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে হেলেনার একটি ছবি ফেসবুকে আবার ভাইরাল হয়। যেখানে তাকে আবারো  ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে বিচরণ করতে দেখা যায়।

জানা গেছে, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হাসপাতালের পাশেই হাড়োকান্দির জনৈক চুন্নু শেখের মেয়ে হেলেনা। প্রাইভেট সেন্টারের হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভাগিয়ে নেয়াই তার পেশা। এর আগে তাকে সদর হাসপাতালেও দেখা যেতো। সেখানে অভিযানে আটক হয়ে জেলখেটে বেরিয়ে এসে সে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কাজ শুরু করে। এবার সে একধাপ এগিয়ে স্বেচ্ছাসেবী পরিচয়ে একটি ভুয়া আইডি কার্ডও বানিয়ে নেয় প্রতারণার কৌশলে।

দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হেলেনা প্রাইভেট সেন্টারের দালালিতে পারদর্শিতা দেখিয়েছে বেশ। প্রাইভেট হাসপাতালের মালিকেরা তার হাতে বর্ষেসরা পুরস্কার হিসেবে বড় এলইডি টিভি তুলে দিয়েছে। দালালির কমিশনের টাকায় জায়গা কিনে নিজের বাড়ি করেছেন। 

অভিযোগ রয়েছে, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘিরে গড়ে ওঠা একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট হেলেনাদের মতো মাঠকর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও সাহস জোগায়। অসংখ্যবার জেলে গিয়েছে সে। প্রতিবারই সিন্ডিকেটের লোকেরা তাকে ক'দিন বাদেই ছাড়িয়ে আনে।

এবিষয়ে জানতে ফমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুমায়ুন কবির ও উপপরিচালক ড. দীপক কুমারের মোবাইলে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2