মদের বারের নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
লাল-সবুজ বাতির আলোতে চলছে নাচ-গান। উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী থেকে মধ্য বয়সীদের জমজমাট আসর। এমন আসরেই এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ খোদ বার মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে সেই দৃশ্যও।
বাংলাভিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এমন দৃশ্য। ১৪ অক্টোবর রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-১-এ গড়ে ওঠা বিলস আর্ট লাউঞ্জ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে চলে এমন কর্মকাণ্ড।
ঘটনার দিনের গেটের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, নেভি ব্লু কালারের টি-শার্ট পরিহিত ব্যবসায়ী দবিরুল তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সাদা শার্ট পড়া ব্যক্তিকে থাপ্পর মারেন। এরপর সাদা শার্ট পরিহিত ব্যক্তিসহ কয়েকজন হামলে পড়েন দবিরুলের ওপর। এতে রাস্তায় লুটিয়ে পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে ফিল্মি স্টাইলে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া হয় সিসি ক্যামেরার বাইরে।
ভেতরের আরেক ফুটেজে দেখা যায় নাচানাচির এক পর্যায়ে ঝামেলার শুরু। অপর ফুটেজে দেখা যায়- লিফটের ভেতর থেকে কয়েকজন বাউন্সার ও সাদা শার্ট পরিহিত সেই ব্যক্তি যাকে আগের ফুটেজে মারতে দেখা যায়। তারা টেনেহিঁচড়ে নিচে নামিয়ে নেন।
সরেজমিনে গুলশান-১-এ গড়ে ওঠা বিলস আর্ট লাউঞ্জ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে গিয়ে পাওয়া যায়নি কাওকে। বাইরের কেচিগেটে ঝুলছে তালা। তবে ওপেন লেখায় আলো জ্বললেও হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সেখানে কেউ আসেনি।
বাড্ডায় নিহত দবিরুলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে। দবিরুলের বৃদ্ধ মায়ের আহাজারিতে পুরো পরিবার এখনও শোকাহত। সবার মাঝে এখনও খুঁজে ফিরছেন তার নিহত ছেলেকে।
নিহত দবিরুলের মা রাবেয়া বেগম বাংলাভিশনকে বলেন, আমার ছেলে বাইরে যাওয়ার সময় মাকে বলেন অফিসে যাচ্ছেন এরপর আর কোনো কথা হয়নি ছেলের সাথে। তবে যারাই মেরে ফেলেছে তাদের বিচার চান তিনি।
নিহত দবিরুলের বড় ছেলে নাবিদ ইসলাম ও ছোট ছেলে তায়েব ইসলাম বাংলাভিশনকে বলেন, রাত ১২টা থেকে বাবাকে ফোন করতে থাকেন তারা। রাত প্রায় দুইটার দিকে একব্যক্তি ফোন ধরে বলেন তার বাবা অসুস্থ তাকে নিয়ে যেতে। ঠিকানা অনুযায়ী গিয়ে দেখেন বাবার জ্ঞান নেই। কি হয়েছে জানতে চাইলে সেখানে থাকা লোকেরা বলেন সিড়ি থেকে পড়ে গেছেন। কিন্তু তাদের তখন বলা হয়নি তার বাবাকে মেরেছেন ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। যদি বলতো তাহলে হয়তো চিকিৎসা করাতে পারলে বাবাকে ফিরে পেতেন বলে জানান।
এদিকে, মাদকদ্রব্য অধিদফতরের উপপরিচালক (ঢাকা মেট্রো কার্যালয়-উত্তর) মো. শামিম আহমেদ বলেন, এই বারের লাইসেন্স অনুমোদন মূলত গুলশান-১ ছিলোনা। যারা এটি পরিচালনা করেন তারা মূলত দুষ্টু প্রকৃতির লোক। আমরা গেলেই বলে আদালতের আইন অবমাননা করছি। তারা মূলত আদালতের একটি মামলার জোড়ে চালানো হলেও মানা হয়নি মাদক দ্রব্য আইন।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বাংলাভিশনকে বলেন, এই ঘটনায় গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন দবিরুলের স্ত্রী। কয়েকজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, বারের ভেতরে সামান্য ঘটনা নিয়ে ঝামেলা থেকে তাকে মারা হয়। তিনি গ্রেপ্তার আসামীদের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বলেন, মূলত বারের মালিক পক্ষের লোক তপুর নির্দেশেই মারা হয় তাকে।
বিভি/এসজি
 
						





 
							
							 
						 
 
										 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							
 
											 
											 
											 
											
মন্তব্য করুন: