• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

অদৃশ্য আশীর্বাদে রাতারাতি কোটিপতি বনে যান পি কে হালদার

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১৫ মে ২০২২

ফন্ট সাইজ
অদৃশ্য আশীর্বাদে রাতারাতি কোটিপতি বনে যান পি কে হালদার

পি কে হালদারের পৈত্রিক বাড়ি এবং ইনসেটে পি কে হালদার।

দেশের আর্থিক খাত ধ্বংসের জন্য সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার। আর্থিক খাতের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকলেও অবশেষে ভারতে গ্রেফতার হলেন ‘বহুমুখী প্রতিভার’ অধিকারী পিকে হালদার।

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দিঘিরজান গ্রামে জন্ম পিকে হালদারের। বাবা প্রয়াত প্রণনেন্দু হালদার। মা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লীলাবতী হালদার। 

বুয়েট থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর আইবিএ থেকে এমবিএ করেন পিকে। পরে চার্টার্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট সম্পন্ন করার পর ২০০৮ সালে যোগ দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইআইডিএফসিতে। এখানে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনে মধ্য দিয়ে জীবনের মোড় ঘুরে যায় পিকে হালদারের। 

২০০৯ সালে মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে ‘অদৃশ্য আশীর্বাদে’ এমডি হিসেবে দায়িত্ব পান রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের। এরপর ২০১৫ সালের জুলাইয়ে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের এমডি পদে যোগ দেন তিনি। এসময়ে এক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অন্য ব্যাংকে রাখতেন। আর সেসব টাকা দিয়ে দেশ-বিদেশে নামে-বেনামে বাড়ি-গাড়ি আর ব্যবসার প্রসার ঘটান পিকে হালদার। আর এভাবেই হাতিয়ে নেন প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।

২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিরবে দেশের আর্থিক খাত ধ্বংস করে বিদেশে সম্পদের পাড়াড় গড়ে পিকে। ২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে যখন তার দখল করা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয় তখনি পি কে হালদার ভারতে পালিয়ে যান। পরে বসবাস শুরু করেন কানাডা ও সিঙ্গাপুরে। এরপর আবার চলে আসেন আবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। সেখানে আপন ভাই প্রীতিশ কুমার হালদারকে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের তথ্য বলছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস  পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানিসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রয়েছে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ।

অস্তিত্বহীন ৩০-৪০টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঋণের নামে জালিয়াতি করে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ সরিয়েছেন পি কে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি, এফএএস ফাইন্যান্স থেকে প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি ও পিপলস লিজিং থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতে কোনো জামানত নেই বলে জানিয়েছে দুদক।

তথ্য বলছে, রাজধানীর পুরানা পল্টনের ইস্টার্ন ট্রেড সেন্টারের ১০তলায় হাল ইন্টারন্যাশনাল, হাল এন্টারপ্রাইজ, সুখাদা লিমিটেড, সন্দীপ ইন্টারন্যাশনাল, উইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল, বর্ণা, ইমেক্সো, আরবি এন্টারপ্রাইজ, এসএ এন্টারপ্রাইজ এবং রাজধানীর পান্থপথের ডিএইচ টাওয়ারের ৮ম ও ১৪ তলায় রেপটাইল ফার্ম, আনন কেমিক্যাল, নর্দান জুট, রহমান কেমিক্যাল, আজিজ ফাইবারসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় খুলে হাজার হাজার কোটি টাকা বেনামে আত্মসাত করেছে এই পি কে হালদার।

বিভি/এসএইচ/এজেড

মন্তব্য করুন: