• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

ব্লগার অনন্ত দাস হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ৬ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
ব্লগার অনন্ত দাস হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

সিলেটের ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ফয়সাল আহমদকে ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। গত ১ জুলাই কলকাতা পুলিশের বিশেষ শাখা স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) একটি দল ফয়সালেক গ্রেফতার করে।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশের গোয়েন্দারা তাদের কাছে ফয়সালের খোঁজ দেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। তারা গত জুনের শুরুর দিকে ফয়সাল ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানান। এমনকি তার বেঙ্গালুরের একটি মোবাইল নম্বরও কলকাতা পুলিশকে দেওয়া হয়। পরে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (‌এসটিএফ)‌ সদস্যরা মোবাইল ট্র্যাক করে বেঙ্গালুরুতে ফয়সালের অবস্থান নিশ্চিত হন।

৩ জুলাই ফয়সালকে কলকাতায় আনা হয়। ফয়সালের কাছে যে পাসপোর্ট মিলেছে, সেখানে রয়েছে কাছাড়-ঘেঁষা মিজোরামের ঠিকানা। ড্রাইভিং লাইসেন্স জোগাড় করেছেন বেঙ্গালুরু থেকে। ভোটার কার্ড শিলচরের। সেখানে তার পরিচয় শাহীদ মজুমদার।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল স্বীকার করেছেন, হত্যাকাণ্ডের সময়ে তিনি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। সে সময় আল-কায়েদার অনুসারী জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন মাদরাসায় পড়ানোর আড়ালে জিহাদি মতাদর্শ ছড়িয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন ফয়সাল। ভারতেও তার নেতৃত্বে আল-কায়েদার একটি শাখা আসামের বরাক উপত্যকায় ঘাঁটি মজবুত করেছে।

২০১৫ সালের ১২মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয় দাস। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাস বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। মামলাটি পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়।

সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। এতে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ এবং ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

২০২২ সালের ৩০ মার্চ সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল অনন্ত খুনের মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)।

কলকাতা পুলিশ বলছে, জিহাদি কার্যকলাপের অভিযোগ স্বীকার করে ফয়সাল জানিয়েছেন, ২০১৫ সালেই শিলচরে পালিয়েছেন তিনি। তবে ব্লগার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। ফয়সালের দাবি, তাকে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বেঙ্গালুরুতে গ্রেফতারের পর কলকাতায় আনা অনন্ত বিজয় দাস হত্যা মামলার পলাতক এই আসামিকে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2