• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

এতিমখানায় বেড়ে ওঠা সল্টু বাবু এখন শতকোটি টাকার মালিক! (ভিডিও)

প্রকাশিত: ২১:২৬, ৩০ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ

রাজধানীর মিরপুরের মধ্য পীরেরবাগে যে বাড়ির ৬তলায় থাকেন রাজউকের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী শফিউল্যাহ বাবু ওরফে সল্টু বাবু। আশপাশের সবাই বাড়িটি সল্টু বাবুর বললেও বাসার নিরাপত্তা প্রহরী বলছেন তাকে চিনেনই না। বাবু নামে কাউকে চিনেন না বলেই তড়িগড়ি করে গেইটে তালা দিয়ে পালিয়ে যান প্রহরী। 

পরে জানা গেল- সাংবাদিকদের বিষয়ে কড়াকড়ি থাকতে প্রহরিদের নির্দেশ দিয়েছেন সল্টু বাবু। স্থানীয়রা বলছেন-এতিমখানায় বড় হলেও রাজউকে কর্মচারী হিসেবে যোগ দেওয়ার পর বদলে যায় তার জীবন। মাত্র এক যুগের ব্যবধানে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাওয়া সল্টু বাবুর ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলতে চান না। কারণ তিনি এখন অনেক প্রভাবশালী। সঙ্গে রাখেন বডিগার্ড। 

এই শফিউল্যাহ বাবুর শতকোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার বিষয়ে গতকয়েক বছর ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে আসছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তো দূরের কথা- উল্টো অফিস সহায়ক থেকে সম্প্রতি রেখাকার হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন তিনি। যেন রাজউকই তার আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা।

তথ্য বলছে- ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মাধ্যমে রাজউকে মাস্টাররোলে চাকুরি পান সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থানাধীন শুভগাছার শফিউল্যাহ বাবু। ২০০১ সালে তার চাকরি চলে যায়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আইনী লড়াই করে চাকরিতে স্থায়ী হন। এরপর আর পিছু ফিরতে হয়নি সল্টু বাবুকে। একের পর এক সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন। তার উত্থানকে অনেকে আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেন।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে- রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর নকল করে নকশা জালিয়াতি করার। খুব সহজেই যেকোনো ব্যক্তির স্বাক্ষর হুবহু নকল করতে সিদ্ধহস্ত তিনি। আর সে কারণে সহকর্মীরা তাকে আদর করে ডাকেন সল্টু বাবু নামে। বলাহয়, উর্ধতন কর্মকর্তাদের সিল নাকি সঙ্গেই রাখেন বাবু। আর এসব করে অর্ধশত ফ্ল্যাট এবং বেশ কয়েকটি বহুতল বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ।

তথ্য বলছে- অত্যন্ত চতুর শত কোটিরও অধিক টাকার মালিক এই সল্টু বাবু কোনো সম্পদ নিজের নামে রাখেননি। কিছু করেছেন প্রয়াত শ্বশুরের নামে, আবার কিছু সাধারণ গৃহিনী স্ত্রীর নামে আর কিছু করেছেন নিজের ভাই ও ভায়রা ভাইদের নামে। যদিও সব সম্পদের অদৃশ্য মালিক সল্টু বাবু। বিদেশ ভ্রমণ করেছেন ১৬ বার। অথচ নিজে এখনও ট্যাক্স পরিশোধ করেন- একটা টিনশেডের বাসার মালিক বলে।

অবৈধভাবে গড়ে তোলো এসব সম্পদ নিজ নামে না থাকলেও কৌশলে ‘অপসরা হোমস লিমিটেড নামে একটি ডেভলপার কোম্পানী খুলে এমডি বানিয়েছেন নিজের স্ত্রী কুলসুমী আক্তার লিজা। যদিও সবকিছু পরিচালনা করেন  বাবু নিজেই। তবে এতো সব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সল্টুর বাড়ি গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার কল করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

অন্যদিকে, এ বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যানের বক্তব্য জানতে তার কাযালয়ে গেলেও সাক্ষাৎ মেলেনি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনেও কল ও ক্ষুদে মেসেজ পাঠিয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মনে করেন- এই ধরণের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা না নিলে তাদেরকেও জবাবদিহিতায় আনতে দুদক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে।

কেবল এক সফিউল্লাহ বাবু নয় রাজউকের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে আছে এমন অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। কিন্তু দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনার আগ্রহ নেই প্রতিষ্ঠানটির উর্ধতন কর্তৃপক্ষের।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2