• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

খোলাবাজারে মিলছে না ডলার, বিপাকে বিদেশগামীরা 

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১৭:০৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
খোলাবাজারে মিলছে না ডলার, বিপাকে বিদেশগামীরা 

খোলা মুদ্রাবাজার বা কার্ব মার্কেটেও নজিরবিহীনভাবে বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ডলার না পেয়ে রাজধানীর একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন বিদেশগামী ও চিকিৎসা নিতে বিদেশ যাওয়া সাধারণ যাত্রীরা।  

ডলারের দাম কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেষ্টার ফলে মানি এক্সচেঞ্জগুলোয় ডলারের আনুষ্ঠানিক লেনদেনও প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। টাস্কফোর্সের ভয়ে ডলার থাকলেও অনেকে খোলাবাজারে বিক্রি করতে চাইছেন না। যারা ডলার বিক্রি করছে- তারাও রাখছেন অতিরিক্ত দর। তবে সে ক্ষেত্রে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করছেন ডলার বিক্রেতারা।

এদিকে ডলার চাহিদার চাপ পড়েছে কার্ডের বাজারে। গত ১২ মাসে কার্ডে ক্রমবর্ধমান লেনদেন সংখ্যা, লেনদেনের মোট অঙ্ক এবং নতুন কার্ড ইস্যু ব্যাপকভাবে বাড়ার যে তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে তার মধ্যে দিয়েই প্রমাণিত হচ্ছে।
 
জুলাইয়ে কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ এক নজিরবিহীন উচ্চতায় পৌঁছায়, এসময় ৯.৬৫ লাখের বেশি কার্ডে লেনদেন হয়। একই সঙ্গে, মোট লেনদেনের পরিমাণ এক মাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৭৬৯ কোটি টাকায় পৌঁছায়। জুনে লেনদেন সংখ্যা ছিল ৭.৬১ লাখ, মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫৪৩ কোটি টাকা। পরের মাসে যা বড় পরিসরে বেড়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তা বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।

একটি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের প্রধান কর্মকর্তা বলেন যে, গড়ে ৭০ শতাংশ ডলারে লেনদেন ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে হয়। বাকিটা ডেবিট কার্ডে হয় বলে জানান আরেকটি ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান।

তিনি বলেন, 'ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার বেশকিছু শর্ত আছে। তাই ডলারে লেনদেন করতে চাওয়া নতুন গ্রাহকদের জন্য আমরা প্রিপেইড কার্ড ইস্যু করি।'

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে,  এবছরের জুন পর্যন্ত মোট ৪২ লাখ ৬৯ হাজার প্রিপেইড কার্ড গ্রাহকদের দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে গত এক বছরে দেওয়া হয়েছে ২৪ লাখ। এ হিসাবে, নতুন প্রিপেইড কার্ড বেড়েছে ১৩৩ শতাংশ। সেইসঙ্গে ক্রেডিট কার্ডও বেড়েছে ১৩ শতাংশ।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আগের চেয়ে ব্যাংকে অনেক কম ডলার আসছে।

তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে আসার পর অনেক ব্যক্তি আগে আমাদের কাছে ডলার বিক্রি করতেন, বর্তমানে তারা এ ধরনের লেনদেন কমিয়েছেন। আরো দাম বাড়ার আশায়, তাদের বেশিরভাগই এখন ডলার ধরে রাখছেন। ফলে চাহিদা বাড়তে থাকলেও, ব্যাংকের কাছে ডলারের জোগান বাড়েনি। তাই ব্যাংকের পক্ষেও গ্রাহকের চাহিদামতো ডলার সরবরাহ করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।'

মাত্র এক মাস আগেও খোলা মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ১১২ থেকে ১১২ টাকা ৫০ পয়সা দরে কেনা যেত। গত দুই সপ্তাহ ধরে এই বাজারেও দর বাড়ছে। সবশেষ বৃহস্পতিবার এক ডলার বিক্রি হয়েছে ১১৮ থেকে ১২০ টাকায়।

এবিষয়ে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কোনো মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেধে দেওয়া দামে ডলার বিক্রি করছে না। যারা বিক্রি করছেন তারাও ট্রাস্কফোর্সের অভিযানের ভয়ে মুখ খুলছেন না। কেউ বেশি দর দিয়ে নিতে রাজি থাকেন তাদের বসিয়ে রেখে এনে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।  

মতিঝিলের একটি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি প্রতিষ্ঠানের ও তার নাম না প্রকাশ শর্তে বলেন, ভাই যে দামে আমরা ডলার কিনি সেই দামে বিক্রি করতে পারি না। তাছাড়া মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা বেশি দাম পাওয়া আশায় এখন বিদেশ থেকে আসলেই ডলার বিক্রি করে দেয় না। ওই বিক্রেতা প্রথমে দাবি করেন, তার কাছে কোনো ডলার নেই। তবে প্রতিবেদক চাইলে চেষ্টা করবেন। খুব জরুরি কাজে নগদ ডলার দরকার বললে, তখনই তিনি প্রতি ডলার ১২১ টাকা পড়বে বলে জানান। তবে লেনদেন বাইরে করবেন বলেও জানিয়ে দেন।

মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হেলাল উদ্দিন সিকদার বাংলাভিশনকে বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেধে দেওয়া দামেই ডলার করছি। কিন্তু বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরা এখন মানিচেঞ্জারে এসে ডলার খুব কম ভাঙায় সেকারণে আমাদের এখানেও ডলার কম। আমরা প্রতি ডলার ১১১.১০ পয়সায় ক্রয় এবং বিক্রি করি ১১২.২০ পয়সায়। বর্তমানে অনেকটা উচ্চ দরেই ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে। ডলারের উচ্চ দাম নেওয়ার এ ঘটনা সর্বত্রই ঘটছে। আমরাও বাইরে থেকে ডলার কিনছি বেশি দামে। যা ব্যাংকের বেধে দেওয়া দামের চাইতেও বেশি। পাশাপাশি ইদানিং কিছু ট্রাভেল অ্যাজেন্সীও ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে ডলার কেনা-বেচা করছে। ইতোমধ্যে একটি ব্যাংকের সিলসহ আমরা কয়েকজনকে ধরেছি। তবে ওই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ওইসব এনডোর্সমেন্টের কাগজপত্র ভুয়া। শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে ট্রেভেল অ্যাজেন্সি মালিকদের সঙ্গেও বসবো।
 

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: