• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ৭ ব্যাংকে নেই বিদেশি বিনিয়োগ, লভ্যাংশে ভাটার আশঙ্কা

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১৬:৪৯, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ৭ ব্যাংকে নেই বিদেশি বিনিয়োগ, লভ্যাংশে ভাটার আশঙ্কা

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সাত ব্যাংকে কোনো বিদেশি বিনিয়োগ নেই। ঋণ বিতরণে অস্বচ্ছতা, পরিচালকদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দুর্বল এসব ব্যাংকের তালিকাভুক্তি নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে শেষপর্যন্ত অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে আইপিও অনুমোদন করে বাজার থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বলতা প্রকাশ করছে এসব ব্যাংক। এদের মধ্যে ৩টিরই  শেয়ার দর এখন ফেসভ্যালুর নীচে রয়েছে। অবস্থার উন্নতি ঘটাতে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপও নিচ্ছে না এসব ব্যাংককের সংশ্লিষ্ট পরিচালকরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বছর শেষে তাই বিনিয়োগকারীরা কাঙ্খিত লভ্যাংশ না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছেন।

যেসব ব্যাংকের শেয়ার দর ফেসভ্যালুর নিচে রয়েছে তাদের ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কি ধরনের ভূমিকা পালন করছে জানতে চাইলে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বাংলাভিশনকে বলেন, প্রশ্নটা অত্যন্ত জটিল। এই মুহূর্তে আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি না। তবে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কমিশন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। মার্কেটে স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে  নতুন বছরে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবে কমিশন।

শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আনতেই হবে আইনে এই ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যে কারণে ব্যাংকগুলোর সেই সুযোগ নিচ্ছেন। পরিচালকরা তাদের ইচ্ছে মতো ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। এতে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। একই ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগও পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। যদি কোনো বিদেশি বিনিয়োগ থাকতো তাহলে সেখানে সুশাসনের প্রশ্নও আসতো। কিন্তু এখন তা হচ্ছে না।

মো. ইশতাক আহমেদ শিমুল নামে একজন উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী বাংলাভিশনকে বলেন, দুর্বল অবস্থায় থাকা এই ব্যাংকগুলোকে মার্জ করতে হবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে। এই ব্যাংকগুলোর পর্ষদ পরিবর্তন করেও কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে এটুকুই বলতে পারি। দীর্ঘদিন হলো তারা ভালো কিছু করতে পারছেন না। তাই ভালো সরকারি বা বেসরকারি কোনো ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় দেখছি না। এতে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন।
তালিকাভুক্ত দেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকে ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাল নাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো মধ্যে কয়েকটি প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে।

এই ব্যাংকগুলো মধ্যে রয়েছে- ঢাকা ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইসিবি ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

খেলাপি ঋণ
ঢাকা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। এনআরবিসি ব্যাংক ১ হাজার ৫০ কোটি , ইউনিয়ন ব্যাংক ৮৪৪ কোটি টাকা, আইসিবি ব্যাংক ৬০৮ কোটি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক ৪৩৪ কোটি টাকা, মিডল্যান্ড ব্যাংক ৩২৭ কোটি,  গ্লোবাল  ইসলামী ব্যাংক ২৪৬ কোটি টাকা।

শেয়ার দর ফেসভ্যালুর নিচে
এদের মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের ১০ টাকার শেয়ার দর কমে এখন তা ফেসভ্যালুর নিচে ৮ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বিএসইসির ৭৯০তম কমিশন সভায় ইউনিয়ন ব্যাংককে শেয়ারবাজার থেকে ৪২ কোটি ৮০ লাখ সাধারণ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৪২৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। ফেসভ্যালুর নীচে থাকা আরেক ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারের দর এখন ৮ টাকা ৬০ পয়সা।

এর আগে গত ১৫ জুন ২০২২ সালের চতুর্থ প্রজন্মের গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক শেয়ারবাজার থেকে ৪২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করার অনুমোদন দেয় বিএসইসি। আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ার এখন ৫ টাকা ৪০ পয়সা। এই ব্যাংকটিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার রয়েছে ২৫.৪৬ শতাংশ।  

শেয়ারের দর ফেসভ্যালুর নিচে থাকা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগকারীদের এখন কি করা উচিৎ? জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বাংলাভিশনকে বলেন, যে কোম্পানিগুলো ভালো ডিভিডেন্ট দিবে বুঝে শুনে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেখানে বিনিয়োগ করাই ভালো হবে। তবে ফেসভ্যালুর নিচে যাদের শেয়ার দর তাদের ব্যাপারে কমিশনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।   

উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে দেশের ৪৩টি ব্যাংকের বিনিয়োগ আছে ১৬ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব আইপিও এর মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা তুলে নিয়ে ব্যাংকগুলো কেন এতটা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, এব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংককের কি কিছুই করার নেই জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক এনিয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।  

 

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: