• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

ইলিশের পোনার শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে চাপিলা নামে!

সহিদুল ইসলাম স্বপ্ন, বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:২৪, ৪ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ইলিশের পোনার শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে চাপিলা নামে!

মাছের পোনা সংরক্ষণে মৎস্য আইন অনুযায়ী, সোয়া চার ইঞ্চির কম পরিধির ফাঁসের জাল ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ নদীগুলোতে জেলেরা আধা ইঞ্চির কম থেকে পৌনে এক ইঞ্চি পরিধির ফাঁসের জাল ব্যবহার করে জাটকাসহ নানা ছোট মাছ নিধন করছেন। যা শহরসহ বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।

বরগুনার বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে নিষিদ্ধ বিভিন্ন জাল দিয়ে অবাধে ধরা হচ্ছে ইলিশের পোনা।এসব পোনা এলাকার হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে ‘চাপিলা’ মাছ হিসেবে। সেই সঙ্গে বানানো হচ্ছে শুঁটকিও। 

মৎস্য বিভাগের দৃশ্যমান কোনো অভিযান না থাকায় অসাধু জেলেরা ইলিশের পোনাসহ নানা মাছের পোনা নিধনের পাশাপাশি বাজারজাত করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখের সামনেই পৌর এলাকার হাটবাজারসহ বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে ইলিশের পোনা। এ ছাড়াও এই ইলিশের পোনা পরবর্তী সময়ে শুঁটকি বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। যেখানে এই ইলিশের পোনা বিক্রি করা ও ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ইউনিয়নে তিন শতাধিক নৌকায় করে জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। এসব জালে এখন বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে ধরা পড়ছে ইলিশের পোনা। যা হাট-বাজার এবং শুঁটকিপল্লীতে সরবরাহ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীতে নিষিদ্ধ জালে প্রতিদিন ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের যে পরিমাণ পোনা মাছ নিধন হচ্ছে তাতে আগামী মৌসুমে ইলিশ মাছ আহরণে চরম সংকট দেখা দিতে পারে।

নদীতে ছোট ফাঁস জালের অবাধ ব্যবহারে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন, বংশবিস্তার ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। মৎস্য আইনে মাছের পোনা সংরক্ষণে সোয়া চার ইঞ্চির কম ফাঁস জাল ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।

কিন্তু এই নদীগুলোতে জেলেরা আধা ইঞ্চির কম থেকে পৌনে এক ইঞ্চি ফাঁস জাল ব্যবহার করে ছোট মাছ নিধন করছেন।

জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চোখের সামনেই প্রতিদিন বাঁধা জাল, গোপজাল, বেহুন্দিজাল ও কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে মাছের পোনা ধরা হচ্ছে। একই ইউনিয়নের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘তিনশরও বেশি নৌকায় ভাসা জাল দিয়া মাছ ধরে তারা। এ জালে জাটকা, পোয়া, তপসি, টেংরাসহ নানা ছোট প্রজাতির অনেক মাছ ধরা পড়ে। যা বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে। আর হাটবাজারে বিক্রির অযোগ্য মাছ শুঁটকি করে পল্লীতে বিক্রি করে দেয় তার।

এ নিয়ে কথা হলে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এভাবে অবৈধ জাল দিয়ে পোনা শিকার করলে ইলিশের বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। নদ-নদীতে পানি থাকবে কিন্তু মাছ থাকবে না।

পোনা শিকার রোধে বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন  বলেন, ‘আমরা গত মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টির বেশি অভিযান পরিচালনা করেছি। যেহেতু জেলায় তিনটি নদী আর আমাদের জনবল কম, ফলে সব জায়গায় পৌঁছানো আমাদের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব নয়। এই সুযোগে অসাধু জেলেরা ইলিশের পোনা ধরে চাপিলা বলে গোপনে বিক্রি করছে। আমরা নদীতে টহল জোরদার করেছি।’

বরগুনা জেলার বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে ইলিশের পোনা (জাটকা) ধরা ও বিক্রি একটি উদ্বেগজনক সমস্যা। এই অঞ্চলে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে ইলিশের পোনা ধরা হচ্ছে এবং তা ‘চাপিলা’ মাছ হিসেবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে, যা ইলিশের প্রজনন ও উৎপাদনের জন্য হুমকিস্বরূপ।
 

বিভি/এ আই

মন্তব্য করুন: