‘২০-২৫টি ব্রোকারেজ হাউজ রেড জোনে আছে’

বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, কিছু ব্রোকার হাউজের এমন সব অনিয়ম পাওয়া যায়, যা মানার অযোগ্য। তাদের মধ্যে ২০-২৫টি ব্রোকার প্রতিষ্ঠানকে রেড জোনে রাখা হয়েছে।
বিএসইসি কমিশনার বলেন, অনেকে বলেন, লোকটা সৎ কিন্তু এটা কেন বলতে হবে কেন এটার মার্কেটিং করতে হবে প্রতিটি ধর্মগ্রন্থেই মানুষকে সৎ থাকতেই বলা হয়েছে। সে হিসেবে তার তো সৎ-ই থাকার কথা। অথচ কিছু মানুষ আমানতকারীর টাকা দেখলে হুশ হারিয়ে ফেলেন। অনেক ব্রোকার হাউজের কমপ্লায়েন্ট অফিসারই নিয়মকানুন মানে চলেন না। অথচ তিনি কমপ্লায়েন্ট অফিসার। এছাড়া অ্যাসোসিয়েশনের নেতাসহ ডিএসইর সাবেক কিছু নেতাও আইন অমান্য করেন। তাহলে তারা কিসের নেতা। যারা নিজেরাই আইন মেনে চলেন না। তাই ওসব সম্মানি ব্যক্তিদের সম্মান রক্ষার জন্য আইন মেনে চলতে হবে। অন্যত্থায় কমিশন যদি ব্যবস্থা নেয়, তখন কোন সুপারিশে কাজ হবে না। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে এমন সব অনিয়ম পাওয়া যায়, যা মানার অযোগ্য। যার মধ্য থেকে এরই মধ্যে ২০-২৫টি ব্রোকার প্রতিষ্ঠানকে রেড জোনে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রাতে রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই টাওয়ারে ‘বিনিয়োগকারীদের ফান্ড ও সিকিউরিটিজের সুরক্ষা জোরদারকরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার আব্দুল হালিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মনিটরিংয়ে আমরা এখনো গুরুত্ব দিচ্ছি। আগে শাস্তির খবর গণমাধ্যমে দেওয়া হতো। এখন তা আর দেওয়া হয় না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে জরিমানা বা শাস্তি দেওয়া থেমে নেই। সোমবারও আমা পাঁচটি কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়ছে। পাশাপাশে যাদের অপরাধ ছোট তাদের আমরা ওয়ার্নিং ওয়ার্নিং দিচ্ছি। নিজের সম্পদের চেয়ে বিনিয়োগকারীদের সম্পদকে বেশি ভালো করে রক্ষা করতে হবে। তাদের সম্পদ ব্রোকারদের কাছে আমানত। এই আমানত যারা রক্ষা করতে পারে না, তারা মানুষই না। যারা অন্যের আমানতের সুরক্ষা দিতে পারেন না তারা মানুষই না।
অর্থ আত্মসাৎকারী ব্রোকারেজ হাউজগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তাদের ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা কোথায় রেখেছেন তা জিজ্ঞেস করেছিলাম। কিন্তু তারা কোন জবাব দেয়নি, চুপ করে ছিল। এতো টাকা বস্তায় ভরে বাসায় নিয়ে রাখাও সম্ভব না। যেহেতু জবাব দেয়নি, নিশ্চয় অনিয়ম করেছে। এ কারণে তাদের পাসপোর্ট জব্দ, এয়ারপোর্ট ও বাসা থেকে গ্রেফতার পর্যন্ত করাতে হয়েছে। কিন্তু এসব করতে আমাদের ভালো লাগে না। আমরা চাই সবাই ভালোভাবে ব্যবসা করুক। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সব ব্রোকারদের নিয়মকানুন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেন, ব্রোকারদের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে। তাহলে শেয়ারবাজারে পুঁজির কোন সংকট হবে না।
ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারের ৬৫ বছরের ইতিহাসে ব্রোকারদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা খুব একটা ঘটেনি। তবে গত দেড় বছরে ৩টি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। যা দুঃশ্চিন্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বর্তমান কমিশন অনেক কাজ করলেও তাদের সময়ে এই ৩টি ঘটনায় বিনিয়োগকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছে না। এর ফলে বাজারে আস্থা কমবে।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: