• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সিন্ডিকেটের কারণে ভোজ্যতেল সংকট, ব্যবসায়ীরা কথা রাখেনি: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ৯ মে ২০২২

আপডেট: ১৫:৩০, ৯ মে ২০২২

ফন্ট সাইজ
সিন্ডিকেটের কারণে ভোজ্যতেল সংকট, ব্যবসায়ীরা কথা রাখেনি: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের বাজারেও দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। তবে খুচরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে ভোজ্যতেলের বর্তমান সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এছাড়া তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে কিছু বাস্তবতাও রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, একজন মুসলমান হিসেবে গত ২০ মার্চ রমজানে তেলের দাম বৃদ্ধি না করার যে আবেদন আমি ব্যবসায়ীদের কাছে রেখেছিলাম সেটা আমার ভুল ছিলো। ব্যবসায়ীদের আবেদনের কারণে সে সময় ১০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছিলো। 

মন্ত্রী বলেন, সাধারণত দেড় মাস পর পর তেলের দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয়। সেই হিসেবে গত তিন মাস তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়নি। রোজায় মানুষের ভোগান্তি যেন না বাড়ে সেজন্য আমি ব্যবসায়ীদের কাছে আবেদন করেছিলাম ঈদের পর আমরা বসে এনিয়ে সিদ্ধান্ত নিবো। কিন্তু তার আগেই তারা মে মাসের ৫-৬ তারিখের দিকেই তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমাকে দেওয়া কথা রাখেনি। তবে আমি তাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। 

সোমবার (৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভোজ্যতেলের উৎপাদকদের সঙ্গে বৈঠকের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলেনে একথা বলেন মন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।

তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয় ব্যর্থ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, একজন মুসলমান হিসেবে মানুষকে বিশ্বাস করা আমার নৈতিক দায়িত্ব তবে, এটা আমাদের ব্যর্থতা। এর দায় আমরা মেনে নিচ্ছি। আমি ব্যবসায়ীদের কাছে অনুরোধ করেছিলাম যেন রমজান মাসে তেলের দাম বৃদ্ধি না করা হয়।

পাশাপাশি এটাও সত্যি, তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। আমরা মাত্র ১০ শতাংশ তেল উৎপাদন করি, ৯০ শতাংশই বাইরে থেকে আসে। আমাদের তেল আমদানির বড় অংশই আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। আমি ইতিমধ্যে দেশটির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারাও তেল আবারও রফতানির বিষয়ে ভাবছে। কিন্তু সেটা কবে থেকে শুরু করা হবে এখনো তা নিশ্চিত হয়।    

তেলের দাম আবার কবে সমন্বয় করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আগে এক দেড় মাসের মধ্যে বসতাম। যখন তেলের দাম কমানোর সুযোগ থাকবে তখন আমরা আবার বসবো। এক্ষেত্রে আমরা আন্তর্জাতিক বাজার মনিটরিং করছি। 

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তেলের দাম নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর ছাপা হচ্ছে। কিন্তু আপনারা কেউ (উপস্থিত সাংবাদিক) কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যে, কোথায় কত টাকা দাম বেড়েছে এই রিপোর্ট আপনারা আপনাদের পত্রিকায় ছেপেছেন? তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ প্রায় সব দেশেই তেলের দাম বেড়েছে। আমাদের দেশের তেলের দাম আর নেপালের তেলের দাম প্রায় একই। গত এক বা দেড় মাসে গ্লোবাল মার্কেটে দামের কেমন তারতম্য সেটা নিয়ে কোনো নিউজ করা হচ্ছে না।পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দুই আড়াই হাজার ডলারের কন্টিনার এখন ১২ হাজার ডলার দাঁড়িয়েছে। এতো কিছুর পরও আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়েও আমরা দেশে ২২ টাকা কমে তেল বিক্রি করছি। আন্তর্জাতিক বাজার হিসাব করলে আজ প্রতি লিটার তেলের দাম দাঁড়ায় ২২২ টাকা। 

অবৈধভাবে তেল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তেল নিয়ে কোথায় কোথায় সমস্যা হয়েছে সেটা চিহ্নিত করেছি। আমরা তা প্রকাশ করব। একই সঙ্গে ভোক্তা অধিকারের অভিযান জোরদার করা হবে। তাদের সহযোগিতার জন্য এপিবিএন ও র‌্যাবকে কাজে লাগানো যায় কিনা সেটাও চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। 

মন্ত্রী আরো জানান, আগামী জুন মাস থেকেই দেশের আরও ১ কোটি মানুষকে টিসিবির ট্রাক সেলের আওতায় আনা হবে।

গত ৫ মে বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকসার্স অ্যাসোসিয়েশন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়। এতে লিটারপ্রতি ৩৮ টাকা বাড়িয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৮ টাকা করা হয়। খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ৭ মে থেকে বাজারে এ দাম কার্যকর হয়েছে।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: