• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ঋণ নিয়ে আলোচনা করতে ফের ঢাকায় আইএমএফের নির্বাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৮:১১, ২০ ডিসেম্বর ২০২২

আপডেট: ০৮:২৬, ২০ ডিসেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
ঋণ নিয়ে আলোচনা করতে ফের ঢাকায় আইএমএফের নির্বাহী

আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক ড. কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান

ঋণের বিষয়ে আলোচনার জন্য আবারও চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় এসেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর নির্বাহী পরিচালক ড. কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা রয়েছে। এছাড়া আগামী মাসে জানুয়ারি মাসে আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকও বাংলাদেশ সফরে আসবেন। ওই সফরে তিনি অর্থমন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানাগেছে।   

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক ড. কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর আগামী ২২ ডিসেম্বর তার ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

অর্থ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফের নিয়মিত কার্যকমের অংশ হিসেবে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের এই সফর। তবে ঋণের বিষয়ে বিশেষত আইএমএফ যেসব সংস্কার চায়, সে বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। জানুয়ারি মাসে আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত সায়েহ বাংলাদেশ সফরে আসবেন। তার সফর শেষে বাংলাদেশকে দেওয়ার জন্য ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব সংস্থাটির পর্ষদে উঠবে। তাই সংস্থাটির দুই শীর্ষ কর্মকর্তার ঢাকা সফরকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে সরকার।

আইএমএফের কাছে গত জুলাইয়ে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ চায় বাংলাদেশ। আইএমএফও শর্তসাপেক্ষে এই ঋণ দিতে রাজি। জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৫ কোটি ৪৫ লাখ ৩১ হাজার ডলার পাওয়া যাবে। সাত কিস্তির এই ঋণের সর্বশেষ কিস্তি পাওয়া যাবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে।

করোনা মহামারি-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের যাত্রা ছিল ইতিবাচক। কিন্তু করোনার ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকে টালমাটাল করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে ডেকেআনে ভয়াবহ মন্দার ঢেউ, যার প্রভাব লেগেছে বাংলাদেশেও। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে বাড়তে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। কিন্তু যুদ্ধের ধাক্কায় সেটা কমতে কমতে এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সেখান থেকে রপ্তানি উন্নয়ন ফান্ডে বিনিয়োগ করে। তাই এই মুহূর্তে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের মূল দুই উৎস রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় রিজার্ভে বড় ধাক্কা লাগে। তবে বাংলাদেশ আমদানিতে রাশ টেনে তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও তার বড় প্রভাব পড়ে, ধাক্কা লাগে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মানুষের ব্যয় বাড়লেও আয় তো বাড়েইনি, বরং মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় নিলে কমে গেছে। এ অবস্থায় গোটা বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মুডে চলে যায়। বিদ্যুতে লোডশেডিং, অফিস সময় পরিবর্তন, কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ ছাড় বন্ধ রাখা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখাসহ নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বারবার সাশ্রয়ের কথা বলে আসছেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার আইএমএফের কাছে ঋণ চায়। এখানে সরকারের দূরদর্শিতার প্রমাণ মেলে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান গর্তে পড়ার পর আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ বিপদ আঁচ করেই ঋণ চেয়েছে। আইএমএফের ঋণ পেতেও যোগ্যতা ও সক্ষমতা লাগে। আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়াও একটা সক্ষমতার ব্যাপার। আর আইএমএফ চাইলেই যে কোনো দেশকে ঋণ দেয় না। নভেম্বরে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। প্রতিনিধি দলটি দফায় দফায় অর্থমন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে। ১৫ দিনে অন্তত বৈঠক শেষে আইএমএফ বাংলাদেশকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানায়। শর্ত সাপেক্ষে মোট সাত কিস্তিতে বাংলাদেশ এ ঋণ পাবে, যার প্রথমটি আসবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। আইএমএফের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণে বাংলাদেশের সব সমস্যা মিটে যাবে, ব্যাপারটি এমন নয়। তবে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে আইএমএফের সম্মতিটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস আনবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। 

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: