বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে কুবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবাসিক হলগুলো বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা হল খোলা রাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিগগিরই ক্লাস পরীক্ষা চালুর দাবি জানান। এছাড়া অন্য আরেকটি মানবন্ধনে শিক্ষকদের উপর হামলার বিচারের দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এসব মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদের উপাচার্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়। যেমন, "হল কারো বাপের না, হল আমরা ছাড়ছি না; আমার অস্ত্র গেল কই, প্রশাসন জবাই চাই; আমার টাকা গেল কই, প্রশাসন জবাব চাই; শিক্ষার্থীদের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন; স্বৈরাচারী আচরণ, মানি না মানব না;" ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।
১৪ তম আর্বতনের শিক্ষার্থী নুসরাত সুরভী বলেন, বর্তমান ভিসি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এখানে আদু ভাই হতে আসি নাই। আমরা তার সন্তান সুলভ। তিনি ক্যাম্পাস, হল বন্ধ করে ঢাকায় গেস্ট হাউজে বসে আছে। যা কখনো একজন অভিভাবকের কাজ হতে পারে না।
১৫ তম আর্বতনের শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী। এই কুত্তা মরা গরমের মধ্যে শিক্ষার্থীদের এসে কেন বসে থাকতে হবে? শিক্ষক সমিতি এতোদিন ক্লাস বর্জন করছিলো কিন্তু এখন ভিসি নিজেই সবকিছু বন্ধ করে বসে আছে! তাহলে তিনি কী শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্তকে সর্মথন করেছে? এরমধ্যে তারা হল বন্ধ করে দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা টিউশন করে জীবন চালায়। যদি প্রশাসন সকল শিক্ষার্থীদের সকল টিউশনের টাকা দিয়ে দেন তাহলে আমরা হল ছেড়ে চলে যাবো।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এখানে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া। আমরা টিউশনি করিয়ে ক্যাম্পাসে চলি। প্রশাসনের এমন স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত মানি না। উপাচার্য আপনার সমস্যা শিক্ষকদের সাথে, শিক্ষার্থীদের সাথে নয়। আমরা আন্দোলনে নামতে চাইনি, আপনি আমাদের আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেছেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। মানববন্ধনের বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের অবৈধ সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। অস্ত্র উপাচার্যের বাংলোতে আছে, অবৈধ টাকা তার বাংলোতে আছে। প্রয়োজনে ওখানে সামরিক অপারেশন করে উদ্ধার করুক। বাংলাদেশে নজিরবিহীন ঘটনা যেখানে ছাত্র-ছাত্রীর কোনো সংঘর্ষ হয় নাই, তারা কোনো মারামারি ও করে নাই। ছাত্ররা এবং ছাত্রলীগের সদস্যরা অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছে। এরই মধ্যে তিনি কিছু বহিরাগত এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছেন। সে আসলে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কাজ করছে। আজকের অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্তকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে যে মানববন্ধন হবে সেই মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
বিভি/রিসি
মন্তব্য করুন: