‘গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডা. জাফরুল্লাহর আদর্শের প্রতিফলন’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জুলাই আন্দোলনে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) শিক্ষার্থীরা কেবল রাজপথে দাঁড়াননি, তারা দেখিয়েছেন শিক্ষা, চেতনা ও সাহসের দুর্বার সম্মিলন। এই সংগ্রামে আমি দেখি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আদর্শের প্রতিফলন।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকালে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনের মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫’ এর অংশ হিসেবে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন গবির কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা। সঞ্চালনায় ছিলেন ফার্মেসী বিভাগের প্রভাষক তানিয়া আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত। এরপর প্রদর্শিত হয় ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তুলে ধরেন তাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, সংকটময় মুহূর্তের বর্ণনা। সভায় জুলাই আন্দোলনে আহত ৯ জন শিক্ষার্থীকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, এই আন্দোলন কেবল আবেগের বিক্ষোভ নয়, এটি ছিল চিন্তাশীল ও আদর্শভিত্তিক প্রতিবাদ। পুলিশ যেভাবে গুলি চালিয়েছে, লাঠিপেটা করেছে তা সহ্য করে যে অবস্থান ছাত্ররা নিয়েছে, তা অসাধারণ সাহসিকতার উদাহরণ। আমি সত্যিই আপ্লুত।
তিনি আরও বলেন, আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সরাতে পেরেছি। কিন্তু, ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনো রয়ে গেছে। সেই কাঠামোর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলবে। আমাদের আন্তর্জাতিক রাজনীতি, সাম্রাজ্যবাদ, প্রতিবেশী রাষ্ট্র; সব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সামনে আরও কঠিন সময় আসতে পারে, কিন্তু, এই প্রজন্মই একদিন গড়বে নতুন বাংলাদেশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, তৎকালীন সময়ে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন অপেক্ষায়, গবির শিক্ষার্থীরা তখনই রাজপথে নেমে সাহসিকতার ইতিহাস গড়েছে। এটি একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থাকবে। শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণের দাবি ট্রাস্টি বোর্ডে উপস্থাপন করা হবে। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণপুরুষ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আদর্শ বাস্তবায়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা বাক স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি। আমাদের যেন দায়িত্বশীলতা বজায় রেখে যৌক্তিক দাবি তুলে ধরা হয়। শহীদ মুগ্ধ, আবু সাঈদদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।
স্মৃতিচারণ শেষে অনুষ্ঠিত হয় ‘জুলাই আন্দোলন’ বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: