• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘ছাত্রত্ব’ না থাকায় জাকসুতে প্রার্থিতা বাতিল ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের

প্রকাশিত: ১১:১৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৬:৪০, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
‘ছাত্রত্ব’ না থাকায় জাকসুতে প্রার্থিতা বাতিল ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের

নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে প্রার্থিতা বাতিল করে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। চিঠিতে জাকসু গঠনতন্ত্রের ধারা ৪ ও ৮ অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়। 

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, তার নিয়মিত ছাত্রত্ব নাই এ বিষয়টি আমরা জানতাম না। গত ৪ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট মিটিং এর পর আমরা বিষয়টি জানতে পারি। জাকসু গঠনতন্ত্র ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। 

তবে নির্বাচন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের একটি সূত্র জানায়, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জন ২০২১ সনের ৪র্থ পর্ব স্নাতক সম্মান নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দুটি কোর্সে অকৃতকার্য হয়। পরীক্ষা গত ২০২৩ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়ে আগস্ট মাসে শেষ হয়। পরে পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) মানউন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উভয় কোর্সের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। উক্ত পরীক্ষা গত বছরের মে মাসে শুরু হয়ে জুন মাসে শেষ হয়েছে। এরপর ৬ষ্ঠ শিক্ষাবর্ষের আওতায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সাথে ওই দুটি কোর্সে পুনরায় মানউন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তবে আবারও অকৃতকার্য হন তিনি। 

গত ১১ আগস্ট স্নাতকোত্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর আবেদন করলে তার ছাত্রত্বের অবস্থা জানার জন্য শিক্ষা শাখায় মতামত জানতে পাঠানো হয়। শিক্ষা শাখা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের বরাতে জানায়, অমর্ত্য রায় একবার ‘অতিরিক্ত’ মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়েছেন। কারণ, সংশোধিত পরীক্ষা অধ্যাদেশ-২০১৯ এর আগের অধ্যাদেশ অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী স্নাতকে ৪ বছরের সাথে অতিরিক্ত ১ বার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পান। অর্থাৎ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পূর্বের শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ১ বার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন। কিন্তু, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের ‘অসাবধানতায়’ ইতোমধ্যে দুইবার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন অমর্ত্য। পরে বিষয়টি নিয়ে মতামতের জন্য উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) কাছে পাঠান। স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে হওয়ায় তা একাডেমিক কাউন্সিলে পাঠানোর মত দেন তিনি। 

একাডেমিক কাউন্সিল দ্বিতীয় মানোন্নয়ন পরীক্ষাকে বিশেষ পরীক্ষা হিসেবে গণ্য করার সিদ্ধান্ত হয়। পাাশপাশি তাকে উক্ত কোর্সে বিশেষ পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ এবং পরীক্ষায় পাস সাপেক্ষে স্নাতকোত্তরে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা বিশেষ পরীক্ষা হিসেবেই গণ্য হবে। 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একটি ভবনের দেওয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি আঁকাকে কেন্দ্র করে ১ বছর মেয়াদী বহিষ্কার করে এবং মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করলে হাইকোর্ট রুল নিশি ইস্যু করে এবং পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার অনুমতি দিতে বিশ্ববিদ্যালকে নির্দেশ দেয়। পরে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে রিটের বিষয়টি তিনি শুনানি করেন নাই বলে জানা গেছে। পরে সে বছরের ৩০ ডিসেম্বর পূর্বের বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে বর্তমান প্রশাসন। এদিকে গত ৩ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের কাছে বহিষ্কারাধীন ১০ মাসের ছাত্রত্ব ফেরত চান। ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত নাকচ করে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। 

এদিকে, জাকসু গঠনতন্ত্রের ৪ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে- ভোটার হিসেবে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ ও নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই থাকতে পারবেন। ৮ ধারায় প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে বৈধ ভোটার হওয়ার কথা বলা হয়েছে। 

গত ১০ আগস্ট জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বিভি/কেএস/পিএইচ

মন্তব্য করুন: