শিক্ষা ক্যাডারদের কর্মবিরতি: শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা, বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

সারা দেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের চলমান কর্মবিরতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, পরিকল্পিত ভাবে সেশনজটে ফেলানোর জন্যই শিক্ষা ক্যাডারেরা কর্মবিরতি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় কলেজের হল পাড়া প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে এ বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়।
এসময় তারা অ্যাকশন টু অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন, শিক্ষা নিয়ে সিন্ডিকেট মানি না মানবো না, শিক্ষা সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, শিক্ষক না লজ্জা? লজ্জা লজ্জা,অবৈধ কর্মবিরতি মানি না মানবো না, আজকের পরীক্ষা নিতে হবে নিতে হবে, পা ভেঙ্গেছে আমাদের দুঃখ কেন তাদের পরিকল্পিত সেশনজট মানি না মানবো না ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন,‘আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কের মধ্যে রাজনীতি বা প্রশাসনিক জটিলতা চাই না। আমাদের দরকার ক্লাস, দরকার শিক্ষা। কর্মবিরতির কারণে সিলেবাস অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে, পরীক্ষার সময়সূচি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে তাদের একাডেমিক জীবন ও ভবিষ্যৎ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজ আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু গতকাল শিক্ষা ক্যাডারদের কর্মবিরতির কারণে আজকের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। আসলে এটা নতুন কিছু না — আমরা যখন ফার্স্ট ইয়ারে ছিলাম তখনও একই ধরনের কর্মবিরতির কারণে আমাদের পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়েছিলো। আবার সেকেন্ড ইয়ারে থাকাকালীনও এমন হয়েছি—তখন এক পরীক্ষার তারিখ প্রায় এক মাস আট দিন পিছিয়ে গিয়েছিলো। এবারও একই পরিস্থিতি। আজ ১৪ তারিখে আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু সেটি নেওয়া হয়নি। গতকাল আমাদের এক ভাইয়ের পা ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে, সেটিকে কেন্দ্র করেই ক্যাডারদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আমাদের মনে হচ্ছে—এটা কেবল ঘটনাচক্র নয়, বরং পরিকল্পিত কিছু। এই কর্মবিরতির কারণে আমাদের পরীক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে। আজকের টেস্ট পরীক্ষা না হলে ফাইনাল পরীক্ষাও পিছিয়ে যাবে—ফলে পুরো সেশন পিছিয়ে পড়বে।’
শিক্ষকদের কর্মবিরতি সন্দেহজনক মনে করে তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের ভেতরে যেন একটা অদৃশ্য সমন্বয় আছে—যেন পরিকল্পিতভাবে আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত করা হচ্ছে। আমাদের এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট একাডেমিক ক্যালেন্ডার নেই, পরীক্ষাগুলো অনিয়মিতভাবে হচ্ছে। এতে করে আমাদের পড়াশোনা ও সময় দুই-ই নষ্ট হচ্ছে। যে ঘটনাটা ঢাকা কলেজে ঘটেছে, সেটা যদি এখানকার সীমিত ঘটনা হয়, তাহলে কেন সারা দেশের ক্যাডাররা একসঙ্গে কর্মবিরতিতে যাবে? আমাদের কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক এবং পরিকল্পিত বলেই মনে হচ্ছে।’
পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘এখন যদি আজকের পরীক্ষা না নেওয়া হয়, আমরা বিভাগীয়ভাবে বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবো। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবো—আগামী দিনের পরীক্ষাগুলোতে আমরা অংশ নেবো কি না।’
উল্লেখ্য, ঢাকা কলেজে শিক্ষকদের ওপর হামলা করা হয়েছে-এমন অভিযোগে আজ সারাদেশের সরকারি কলেজে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: