• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: একই সুরে মত প্রকাশ কবীর সুমন, নচিকেতার

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ৯ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: একই সুরে মত প্রকাশ কবীর সুমন, নচিকেতার

পেহেলগামে হামলার ইস্যু নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে একের পর এক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে হতাহতের সংখ্যাও বাড়ছে।

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর প্রতিনিয়ত পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে দুই পক্ষের মধ্যে। এতে পরিস্থিতি সামাল দিতে সীমান্ত এলাকার পর ভারতের রাজধানী দিল্লিতেও উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।

এরই মধ্যে এই উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে হামলার সমর্থন জানিয়েছেন ভারতের বেশিরভাগ শোবিজ তারকা। তবে পশ্চিমবঙ্গের দুই সংগীতশিল্পী কবীর সুমন ও নচিকেতা চক্রবর্তী ঠিক ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে তাদের মতামত। নচিকেতা এ সবকে মুনাফার খেলা বলে মন্তব্য করেছেন। অন্যদিকে কিছুতেই যুদ্ধ চান না কবীর সুমন।

কবীর সুমন বলেন, যারাই যুদ্ধ করুক, যে যুদ্ধ করুক, যে কারণে, যেভাবে যুদ্ধ করুক, আমি যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। যুদ্ধবিরোধী মানুষ আমি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধের বিরোধিতা করে এ পোস্টে তিনি আরও লেখেন, আমি তো লিখেছিলাম আমার গানে গানে এই যুদ্ধ বন্ধের কথা। সেই গান আজ সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মনে পড়বে। এই দেশ যখন ভাগ হয়েছিল, তখন কেউ আমার অনুমতি নিয়েছিল? কোনো দেশের মানুষের সম্মতি নিয়েছিল? আমি তো ১৯৪৯ সালে জন্মেছি, তখন তো আমার কোনো পছন্দ ছিল না! দেশপ্রেম আমার কাছে একটা বুজরুকি। যেখানে মানবপ্রেম নেই, প্রাণীদের জন্য ভালোবাসা নেই, সেই দেশপ্রেম দিয়ে কী হবে?

তার মতে, যুদ্ধে শুধু মানুষ নয়, প্রকৃতির বিশাল ক্ষতি হচ্ছে। তবে এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। একটা যুদ্ধ হচ্ছে, গুলি চালানো হচ্ছে, বোমা ফেলা হচ্ছে—কতগুলো গাছ পুড়ে যাচ্ছে, প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ প্রাণী, পাখি, পোকামাকড়। কেউ এসব নিয়ে কথা বলে না। পানি বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু দেশের নেতাদের এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই।

অপরদিকে ভিন্ন একটিপ চিত্র ফুটিয়ে তোলেন নচিকেতা চক্রবর্তী। তার মতে, পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে, যত হিংসা ছড়িয়েছে—সব কটির নেপথ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে। ইতিহাস থেকেই গায়কের উপলব্ধি, যুদ্ধ মানেই মুনাফার খেলা।

নচিকেতা বলেন, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ। এই একটা কারণে আমি যুদ্ধ নিয়ে আতঙ্কিত। সারা পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে, যত হিংসা ছড়িয়েছে, সব কটির নেপথ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে। সব যুদ্ধ স্পনসর করা! আমি প্রমাণ করে দেব।

উদাহরণ টেনে নচিকেতা বলেন, এত যুদ্ধের কারণে একশ্রেণি লাভবান হচ্ছে। মনে রাখবেন, রকফেলারদের তেল প্রস্তুতকারী সংস্থা সেই সময় জার্মানি ও ইতালি, দুই দেশকেই পেট্রল সরবরাহ করেছিল। এই সরবরাহ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। কিছু ঐতিহাসিকের মতে, এটি শুধুই ব্যবসা। 

এ দুই সংগীতশিল্পীর চিন্তার অনেকটাই মিল পাওয়া যায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এর এক বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না যেখানে তার কোনো স্বার্থ নেই। খবর বিবিসির

আমেরিকান টিভি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে পারি না, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতির পথ বেছে নিতে পারে। কূটনৈতিক দিক থেকে আমাদের আশা এবং প্রত্যাশা হলো পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার দেশ ভারত ও পাকিস্তানকে উত্তেজনা কিছুটা কমাতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করতে পারে।

জেডি ভ্যান্স বলেন, ভারত আক্রমণ করলে পাকিস্তান জবাব দেয়। উভয় দেশেরই ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করা উচিত। পাকিস্তান-ভারতযুদ্ধ যেন পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত না হয়। যদি তা হয়, তাহলে অনেক ক্ষতি হবে।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে আত্মসমর্পণ করতে বলতে পারে না। আমরা পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণ করতে বলতে পারি না।

তিনি বলেন, পাকিস্তান-ভারত সংঘাত শিগগিরই সমাধান করা উচিত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সংঘাত নিয়ে উদ্বিগ্ন। কূটনৈতিক দিক থেকে আমাদের আশা এবং প্রত্যাশা হলো পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত হবে না।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন।
 

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: