• NEWS PORTAL

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২: চুক্তি পেতে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

আপডেট: ২৩:০৩, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২: চুক্তি পেতে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা

সম্প্রতি বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) আয়োজিত ‘নক্ষত্রের দেশে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে পুরো দেশকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে দেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর সরকার। 

ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে দেশীয় টেলিভিশনের সম্প্রচার চলছে। দুর্গম এলকার ১৬০টি ইউনিয়নে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব জেলা-উপজেলায়ই উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।  

মোস্তাফা জব্বার বলেন, সরকার ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ নির্মাণের সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। দ্রুতই চুক্তি বাস্তবায়িত হবে। জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পেতে রাশিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের মধ্যে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডব্লিউসি) বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণের বাণিজ্যিক ও কারিগরি দিক ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দিয়েছে। 

এই বিষয়ে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সরকারের এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের পর যোগ্য কোম্পানিকেই স্যাটেলাইটটির নির্মাণ কাজ দেওয়া হবে। 

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সম্প্রচারধর্মী হলেও স্যাটেলাইট-২ হবে অপটিক্যাল ভিএইচআর-সার (সিনথেটিক অ্যাপারচার রাডার) সমন্বিত ক্যাটাগরির। এই ক্যাটাগরির স্যাটেলাইট জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিষয়, নিরাপত্তা, কৃষি, ব্লু-ইকোনমি এবং ভূমি ও সমুদ্র এলাকার ছবি তুলতে সক্ষম। 

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২-এর নির্মাণ কাজের চুক্তির বিষয়ে দু’টি বিষয় গুরুত্ব পাবে। 

১. পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের সংগে নির্মাতা কোম্পানির সক্ষমতা।
২. কূটনৈতিক দক্ষতা। 

তবে সূত্র বলছে, নির্মাতা কোম্পানির কারিগরি দক্ষতাই বেশি প্রাধান্য পাবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটলাইট-২-এর ধরন বিবেচনায় আমেরিকা, ইউরোপ বিশেষ করে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো এগিয়ে আছে। যাদের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, কানাডা , ফ্রান্স এবং রাশিয়া। 

সূত্র বলছে, বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট অপটিক্যাল ভিএইচআর-সার ক্যাটাগরির জন্য ১৫টি অপটিক্যাল ও একটি সার সমন্বিত স্যাটেলাইটের সুপারিশ করেছে পিডব্লিউসি। যেখানে স্যাটেলাইটের ভিএইচআর-এর লাইফটাইম ধরা হয়েছে পাঁচ বছর এবং সার স্যাটেলেইটের লাইফ টাইম ধরা হয়েছে আট বছর। 

এই শর্ত পূরণে রাশিয়া ব্যর্থ। কারণ, রাশিয়ার কোম্পানির তৈরি অপটিক্যাল স্যাটেলাইটের লাইফটাইম তিন বছর। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সক্ষমতা পূরণের সামর্থ্য শুধু ইউরোপ-আমেরিকার কোম্পানিগুলোরই রয়েছে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ বলছে, ইউরোপ এবং আমেরিকা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২-এর বড় বাণিজ্যিক বাজার হতে পারে। ফলে রাশিয়ার কোম্পানির সংগে স্যাটেলাইট চুক্তি বাস্তবায়িত হলে স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক বাজারে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও কাটসা (কাউন্টারিং আমেরিকা’স অ্যাডভারসারিজ থ্রো স্যাংশন অ্যাক্ট) নীতিমালাও এক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। 

সূত্র বলছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ লো আর্থ অরবিটাল প্রযুক্তির হওয়ায় ইউরোপের দেশগুলো এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। কারণ, লো আর্থ অরবিটালের আশি শতাংশের উপর বাজার ইউরোপ দখল করে রেখেছে।

তবে এই প্রকল্পের শুরু থেকেই রাশিয়ার পক্ষ থেকে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিভি/এসআই/এসডি

মন্তব্য করুন: