• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

হুন্ডি কমিয়েছে নগদ- এমডি তানভীর এ মিশুক

প্রকাশিত: ২১:১০, ১০ মার্চ ২০২২

আপডেট: ১১:২৬, ১১ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
হুন্ডি কমিয়েছে নগদ- এমডি তানভীর এ মিশুক

মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) দশ বছরে আগে যা ছিল তার বড় ধরনের পরিবর্তন শেষ দুই বছরে। দশ বছরের এমএফএস’র (মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস) ব্যাপারটা ছিল এরকম ঢাকা থেকে টাকা ঢুকবে হয়তোবা কুড়িগ্রামে বের করা হবে, যা এক প্রকার লোকাল রেমিটেন্স ছিল। এই টাকা পাঠানোর ৭৫ শতাংশ মার্কেট ছিল ওটিসি মার্কেট, যাকে সোজা ভাষায় লোকাল হুন্ডি হিসেবে বিবেচনার করা হয়। এই লোকাল হুন্ডি থেকে মানুষের যে পরিবর্তন তা নগদের মাধ্যমেই বলে মনে করেন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। 

বৃহসতিবার (১০ মার্চ) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আগে একটি একাউন্ট খুলতে দুই পাতার ফরম পুরণ করতে হতো। কিন্তু এই ফরম পুরণ অনেকের পক্ষেই সম্ভব ছিল না। কারণ, ফরমে প্রচুর পরিমান তথ্য দিতে ফরম পুরণ করতে হতো। তখন একজন মুদি দোকানদার কি করতো, সে স্বাভাবিকভাবে অন্যকে তার টাকা দিয়ে বলতো টাকাটা পাঠিয়ে দেন। তখন, আসলে টাকাটা কোথায় যাচ্ছে তা ট্রেস বা বুঝা যেতো না। কিন্তু নগদ এই ধারণাকে একেবারেই বদলে দিয়েছে। 

তানভীর এ মিশুক বলেন, স্মার্টফোনে এনআইডির তথ্য এবং সেলফি দিয়েই নগদের একাউন্ট খোলা সম্ভব। কিন্তু আমরা যখন দেখলাম, অনেকেরই স্মার্টফোন নেই কারণ দেশে মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে বাঁকি ৭০ শতাংশ মানুষ  বাটন ফোন ব্যবহার করে, তখন আমরা ডায়ালের মাধ্যমে একাউন্ট খোলার সহজ পদ্ধতি বের করলাম। মূলত তখনই পরিবর্তনটা আসল। 

ডায়ালের মাধ্যমে একাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালুর পর নগদের একাউন্ট খেলার পরিমান অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু এই বাড়তি একাউন্টগুলোকে কিভাবে নগদ সুরক্ষা প্রদান করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তানভীর এ মিশুক বলেন, বিশ্বের সবশেষ নিরাপত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে নগদ। তাই নগদের ডাটা ব্রিচ করে আসলে দুষ্কৃতি করা সম্ভব না। 

কিন্তু আমরা যখন বিভিন্ন চক্রের খপ্পরে পড়ে নিজের পাসওয়ার্ড বা ওটিপি শেয়ার করি তখন আসলে আমাদের কিছু করার থাকে না। মানুষের একাউন্টের সর্ব্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে নগদ নিয়মিত টিভি অ্যাড এবং বিভিন্ন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে থাকে বলে জানান তিনি। 

সাংবাদিকের সাথে ক্যাশলেস সোসাইটি নিয়েও কথা বলেন তানভীর এ মিশুক। তিনি বলেন, পৃথীবির প্রতিটি দেশ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশও একসময় ক্যাশলেস সোসাইটি’র বাহিরে থাকবে না। সেক্ষেত্রে শুরু ঢাকা কেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা করলে চলবে না। আমাদের ভাবতে হবে আরো রুট পর্যায়ে। কিভাবে একজন রিক্সা চালক ক্যাশ ছাড়াই পে করতে পারবে। 

সেক্ষেত্রে ফিনটেক অপারেটরদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার কথা বলেন এই উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, প্রতিটি ফিনটেক অপারেটরকে আলাদা আলাদা সেক্টর নিয়ে কাজ করতে হবে। যেমন কেউ ন্যানো লোন আবার কেউ মাইক্রো এসএমই নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় প্রতিটি সেক্টর গ্রো-আপ করলেই দেশ দ্রুতই ক্যাশলেস সোসাইটিতে পরিণত হবে। 

তানভীর এ মিশুক অভিযোগের সুরে বলেন, কেউ কেউ শুধুমাত্র প্রোডাক্ট শো করার জন্য বাজারে আছে। আসলে তাদের দিয়ে এই কাজ সম্ভব নয়। যারা প্রকৃত পক্ষেই ফিনটেক (ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি) বোঝে সেরকম লোক আসলে ইন্ড্রাষ্ট্রিতে বড়ই দরকার। 

তানভীর এ মিশুক বলেন, সরকারি বিভিন্ন ভাতা আগে ম্যানুয়ালি বিতরণ করা হতো । নগদই প্রথম এই পদ্ধতির ডিজিটালাইজেন করে ভাতা প্রদান করে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে অনেক সময়ই দেখা গেছে টাকা বিতরণ নিয়ে প্রশ্ন থাকত কিংবা বরাদ্দের সব টাকাই বিতরণ দেখানো হতো কিন্তু নগদই প্রথম অ-বন্টনকৃত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে। 

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের এক প্রকার হাত পা কাটা আছে। তাই গাইডলাইন পরিবর্তন ছাড়া অনেক কিছুই মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসে থেকে করা সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ক্যাশলেস সোসাইটি’র যে স্বপ্ন দেখেন তা বাস্তবায়নে অবশ্যই ডিজিটাল ব্যাংকিং এর দিতে যেতে হবে, যেখানে একটা সুপার অ্যাপস মানুষের সকল ধরনের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দশ বছরের মধ্যেই দেশ অনেকটাই ক্যাশলেস সোসাইটিতে পরিণত হবে। 

সফলতা-ব্যর্থতা মুদ্রা এপিঠ-ওপিঠ। নগদের ব্যর্থতা সম্পর্কে তানভীর এ মিশুক বলেন, আসলে দশ বছর আগে যখন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসটা শুরু করা হয়েছিল, তখন ব্যবসায়িক মডেলটাই ভূল ছিল, যেটি পুরো ইন্ড্রাষ্ট্রিকে কেই নষ্ট করে দিয়েছে, যার ভূক্তভোগী আমরা। যেহেতু আমরা কাজ শুরু করেছি আশা করছি পরবর্তী দশ বছরে আমরা ইন্ড্রাস্ট্রিকে অনেকটাই পরিবর্তন করতে পারবো। 

তানভীর এ মিশুক বলেন, যেহেতু সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে, আমরা যে যার জায়গা থেকেও কাজ করছি। ডিজিটাল প্রতারণা রোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান তিনি।

বিভি/এসআই/এইচকে

মন্তব্য করুন: