• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

দেশে বড় ধরনের সাইবার হামলার শঙ্কা; সতর্কতার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের 

প্রকাশিত: ২৩:১৬, ২৭ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ২৩:৪২, ২৭ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
দেশে বড় ধরনের সাইবার হামলার শঙ্কা; সতর্কতার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের 

রাশিয়ান একটি সংবাদপত্রের বরাতে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে দাবি সংবাদপত্রটির। 

সরকারের সাইবার নিরাপত্তা ইস্যু দেখভালের দায়িত্বে থাকা বিজিডি ই-গভ সার্ট সাইবার হামলার বিষয়টি উড়িয়ে না দিয়ে গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে বলে জানান। এছাড়াও বড় ধরনের সাইবার হামলার বিষয়ে সতর্ক করে ঈদের ছুটিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।  

ভয়েস অব আমেরিকা ২০২১ সালের অক্টোবরের ‘সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন’ এর বরাতে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের হার বেড়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সে সময় দেশে ২৮ দশমিক ৩১ শতাংশ হ্যাকিং এর ঘটনা ঘটেছে। যা ২০১৯ সালে ছিলো ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গড়ে এ হার বেড়েছে ১৩ শতাংশেরও বেশি। 

এর আগেও বাংলাদেশকে টার্গেট করেছিলো সাইবার অপরাধিরা। চলতি বছর শনিবার (১৫ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র মোবাইল অপারেটর টেলিটকের (https://www.teletalk.com.bd) ওয়েবসাইট হ্যাক হয়। 

২০২১ সালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা নিবন্ধনের অ্যাপ ‘সুরক্ষায় ২০ দেশের অবকাঠামো ব্যবহার করে সাইবার হামলা চালায় সাইবার অপরাধীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৪৮ ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি বার এ সাইবার হামলা চালায় হামলাকারীরা। 

বিজিডি ই-গভ সার্ট গত ২৫ এপ্রিল দেশের টেলকো অপারেটরদের ২০২২ সালের কোয়ার্টর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের চারটি মোবাইল অপারেটরের কমিউনিকেশন সিস্টেমে ম্যালওয়ার এর চোখে পড়ার মতো। এসব মোবাইল অপারেটরের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ‘অ্যান্ড্রয়েড.হ্যামার’, অ্যাভালাঙ্কি-অ্যানড্রোমিডা’, ‘অ্যান্ড্রয়েড.রুটনিক’ এবং অ্যান্ড্রয়েড.ব্যাকডোর.প্রাইজমেড’ নামক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। 

ছবি: বিজিডি ই-গভ সার্ট

এসব হামলা থেকে প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশকেও টার্গেট করে কাজ করছে হ্যাকার গোষ্ঠী। সম্প্রতি আবারো নড়েচড়ে বসেছে হ্যাকাররা। একাধিক দেশিয় এবং আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালাচ্ছে বিভিন্ন হ্যাকার গোষ্ঠী। 

এদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই দু’দেশের সাইবার যোদ্ধারা একে অপরের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, সাইট ব্লকসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিসাধন করেছে। পরবর্তীতে লক্ষ্য করা গেছে, তাদের এই আক্রমনের সাথে বিভিন্ন দেশের সাইবার এক্সপার্টারাও যোগ দিয়েছেন। 

ভারতের বেসরকারি একটি সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লাদাখ সংলগ্ন পাওয়ার গ্রিডগুলোর নেটওয়ার্কে হ্যাকারদের অনুপ্রবেশ লক্ষ্য করেছে তারা। লাদাখের কাছে পাওয়ার গ্রিডে চীনের সাইবার আক্রমণ চীনের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন হ্যাকাররা আট মাস ধরে লাদাখের কাছে ভারতীয় বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রগুলো টার্গেট করেছে। বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে সামনে এসেছে এমন সব তথ্য। 

শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের একাধিক তেল পরিবহন ও সংরক্ষণ কোম্পানিতে সাইবার হামলা হয়েছে। হামলায় জার্মানি, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের কয়েকটি তেল সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আইটি সিস্টেমের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। 

ব্লকচেইন বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান চেইন্যালাইসিসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্মে হামলা করে ৪০০ মিলিয়ন মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ চুরি করেছে। 

২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক বিলিয়ন ডলার হ্যাক করার পরিকল্পনা করে এবং এ কাজে প্রায় সফল হতে চলেছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ৮১ মিলিয়ন ডলার ছাড়া বাকি অর্থের ট্রান্সফার আটকে যায়।

হ্যাকিং বলতে সাধারণভাবে কারো অনুমতি ছাড়া তার ডিভাইস বা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে তথ্য চুরি করাই হ্যাকিং। এই পেশার সাথে পৃথিবীর অনেক দেশের এক্সপার্টরাই জড়িত, যারা বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষিত রাখে, আবার কেউ কারো সিস্টেম হ্যাক করে অন্যের ক্ষতিসাধনে ব্যস্ত। 

প্রযুক্তি যতো উন্নত হচ্ছে, সাইবার ওয়ার্ল্ডের বিস্তৃতি ততোই বাড়ছে, সংগে বাড়ছে সাইবার অপরাধীদের অপরাধ কার্যক্রম। এক দেশ থেকে সাইবার হামলা চালানো হচ্ছে অন্য দেশে। 

প্রযুক্তি আশির্বাদ না অভিশাপ, এই বিতর্কে না জড়িয়ে সকলেই এই এক বাক্যে এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য যে প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া এক দিনও অতিবাহিত করা সম্ভব নয়। আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে প্রযুক্তি। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রযুক্তিই একজন মানুষকে চালিত করছে।

বিভি/এসআই/এইচকে

মন্তব্য করুন: