ভারতীয়দের দাপটে নিজ দেশেই সংখ্যালঘু কুয়েতিরা (ভিডিও)
কথায় আছে, পৃথিবীর সব প্রান্তেই দেখা মেলে ভারতীয়দের। আর কুয়েতে এই ভারতীয়দের সংখ্যা বিপুল। দেশটির সাধারণ কুয়েতিদের কাছে এখন বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছেন জীবিকার তাগিদে আসা ভারতীয়রা।
কর্মের সন্ধানে ও উন্নত জীবনের আশায় সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান ভারতীয় নাগরিকেরা। কিন্তু কুয়েতের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে তা চোখ কপালে উঠবার মতোই বিষয়। উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশের মোট কর্মীর সংখ্যা ২১ লাখ যার মধ্যে শুধু ভারতীয় কর্মীর সংখ্যাই প্রায় সাড়ে ৫ লাখ। সম্প্রতি কুয়েতের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তাতেই পড়েছে কুয়েতের সরকার। কেননা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের কারণে এখন কুয়েতিরাই প্রায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। ফলে অভিবাসীদের নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে দেশটি। সরকারি খাতে কুয়েতিদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, আরও কুয়েতি যুবকদের বেসরকারি খাতে কাজ করতে সহায়তা করার জন্য একটি নতুন নীতি গ্রহণ করেছে কুয়েত সরকার। এছাড়া কুয়েত সরকারের সাথে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলিকে আরও কুয়েতি নাগরিক নিয়োগে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
কুয়েতি যুবকদের আরও বেশি দক্ষ করে তুলতে ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম। এর ফলে বিদেশি শ্রমিকদের জায়গা কুয়েতিরা প্রতিস্থাপন করতে পারবে বলে আশা করছেন তারা। এমনকি নতুন বেসরকারি ব্যবসার মালিকানা থেকে প্রবাসীদের নিষেধ করার ব্যাপারেও ভাবা হচ্ছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন আগে থেকেই যদি এ বিষয়ে ভাবা হতো তাহলে হয়ত এতটা কঠিন সিদ্ধান্তের দিকে যেতে হতোনা।
সর্বশেষ এই পরিসংখ্যানে বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের সংখ্যা ২০২৩ সালে প্রায় ১৮ হাজার থেকে বেড়ে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮০০ জনে পৌঁছেছে; যা কুয়েতের মোট কর্মশক্তির প্রায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের পরই আছে পাকিস্তান। গত বছর কুয়েতের শ্রমবাজারে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা গেছে নেপালি নাগরিকদেরও। ২০২২ সালের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে গত বছরের ডিসেম্বরে কুয়েতে নেপালি কর্মীদের সংখ্যা ৮০ হাজার ৩১৩ জনে পৌঁছেছে।
৪৮ লাখ মানুষের দেশ কুয়েতে বিদেশি প্রবাসী রয়েছেন প্রায় ৩৩ লাখ। প্রবাসী কর্মীর হিসাবে ভারতের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে আছে মিসর। নিজ দেশেই কুয়েতি কর্মীদের অবস্থান তৃতীয়। বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের পরও গত এক বছরে কুয়েতি কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১২ হাজার।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: