• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

হাঙ্গেরিকে ঘিরে নতুন ছক কষছেন এরদোয়ান (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ৮ জুলাই ২০২৪

ফন্ট সাইজ

তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের স্বর্ণযুগ পার করছে এক সময়কার উসমানীয় সম্রাজ্যভুক্ত হাঙ্গেরি। প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানেদের নেতৃত্বে সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্সি পেয়েছে হাঙ্গেরি। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্ত হওয়ার আশা দেখছেন এরদোয়ান। বলা হচ্ছে, প্রভাবশালী আঞ্চলিক জোটটির সদস্য হতে পারলে বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম পরাশক্তি হয়ে উঠতে পারে এরদোয়ানের দেশ।

গত কয়েক দশক ধরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হতে চাইছে তুরস্ক। তাই হাঙ্গেরিকে নিয়ে এখন নতুন করে ছক কষছেন এরদোয়ান। যদিও, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপীয় জোটে নিজের প্রচুর বিরোধী তৈরি করেছে হাঙ্গেরি। এমনকি প্রায়সময়ই আইনের শাসন ও মানবাধিকার নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে দেশটি। এমনকি যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা একমাত্র ইউরোপীয় দেশও এই হাঙ্গেরি।  

হাঙ্গেরিও এরই মধ্যে তুরস্কের ইইউ ভুক্তির ব্যপারে তোরজোড় শুরু করেছে। প্রেসিডেন্সি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক প্রোগ্রামে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের গুরুত্ব তুলে ধরে হাঙ্গেরি। সেখানে বলা হয়, উত্তর ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে একটি স্থিতিশীল ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা এবং তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতামূলক  সম্পর্ক রক্ষা করলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লাভবান হবে।  দ্বিপক্ষীয় সাধারণ স্বার্থগুলোতে তুরস্কের সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতা আরও গভীর করতে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও জানায় হাঙ্গেরি।

তুরস্কের ভৌগলিক অবস্থান ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশে। ইউরোপীয়ান নেইবারহুড এনলারজমেন্ট পলিসি বা নীতির   ভিত্তিতে দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে কোন বাধা বা অন্তরায় নেই। তাছাড়া তুরস্ক কাউন্সিল অব ইউরোপ, ইউরোপীয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইট্‌স, ন্যাটো ও জি২০ এর সদস্য পদ লাভ করেছে। 

কয়েক দশক ধরে তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নানা কারণে থেমে আছে তাদের ইইউ সদস্য পদ অর্জন। তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদ পাওয়ার জন্য ১৯৮৭ সালে প্রথম আবেদন করে। এরপর দাবিদার রাষ্ট্রের মর্যাদা পায় ১৯৯৯ সালে। সদস্যপদ নিয়ে দরকষাকষি শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। তবে সাইপ্রাস সমস্যা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রের বিরোধীতার কারণে এই আলোচনা ২০০৭ সাল থেকে স্থগিত হয়ে যায়।

২০১৩ সালে ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীদের স্রোত নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তুরস্কের তখনকার প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলুর সঙ্গে আঙ্কারায় বৈঠক করেন এঞ্জেলা মেরকেল৷ মেরকেল তুরস্কের ইইউ সদস্য হওয়ার দাবিকে সমর্থন করার আশ্বাস দেন৷ কিন্তু এরপর অনেক ইউরোপীয় নেতা দাবি করেন কামাল আতাতুর্কের সেকুলার নীতি থেকে দেশটি সরে যাচ্ছে ও ইসলামপন্থী নীতির দিকে যাচ্ছে। এছাড়া তুরস্কের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নাজুক পরিস্থিতি, গ্রিসের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক এবং সাইপ্রাসের সাথে দ্বন্দ্বের যুক্তি তুলে ধরে তুরস্কের ইইউ ভুক্তির আলোচনা স্থিমিত করে দেয়া হয়।

এরপর ২০১৬ সালে ঘটে এক দল বিপথগামী সেনা অফিসারের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টা। যে ঘটনায় তুরস্কে দেড় লাখ মানুষকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় ও ৪০ হাজার লোককে জেলে ঢোকা‌নো হয়। তাদের মধ্যে বহু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক ও আন্দোলনকারী ছি‌লেন। তখন গোটা ইউরোপ জুড়ে তুরস্কের মানবাধিকার প্রশ্নে নিন্দার ঝড় উঠে। যার ফলে ২০১৬ সা‌লের ২৪ নভেম্বর ইইউ পার্লামেন্ট তুরস্কে মানবাধিকার ও আইনের শাসনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং ইইউতে প্রবেশের আলোচনা স্থগিতের জন্য সিংহভাগ সাংসদরা ভোট প্রধান করেন। তবে এখন নতুন এই পরিবর্তিত পরিস্থিতে হাঙ্গেরিকে কাজে লাগিয়ে এরদোয়ান কতদূর আগাতে পারেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: