• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজনীতিতে কেন এত গুরত্বপূর্ণ (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ১১ আগস্ট ২০২৪

ফন্ট সাইজ

ভারতের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের রহস্যে ঘেরা ৭টি রাজ্য। যাদের একত্রে বলা হয় সেভেন সিস্টার্স। ভারত তো বটেই প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এই সাতটি রাজ্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইস্যুর জন্ম দেয়। সম্প্রতি বানলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড মুহাম্মদ ইউনুসের একটি মন্তব্যের জেরে এখন আবারও আলোচনায় এই সেভেন সিস্টার্স।

সেভেন সিস্টার্সের ইতিহাস ঘাটতে গেলে আমাদের ফিরে যেতে হবে সেই ১৯৭২ সালে। সে বছর ত্রিপুরার একজন বিখ্যাত সাংবাদিক, জ্যোতি প্রকাশ সাইকিয়া একটি রেডিও টক-শোতে ভারতের অরুণাচলপ্রদেশ, মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, মিজ়োরাম, নাগাল্যান্ড এবং ত্রিপুরা রাজ্যকে সেভেন সিস্টার্স নাম দেন। এই সাতটি রাজ্যের উপরে তিনি একটি বইও লেখেন যার নাম 'ল্যান্ড অফ সেভেন সিস্টারস'। মূলত এরপরই এই নমটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

এই সাত রাজ্যের আয়তন ২,৫৫,৫১১ বর্গকিলোমিটার, যা ভারতের মোট এলাকার প্রায় ৭ শতাংশ। এসব রাজ্যগুলো একে অপরের ওপর নির্ভরশীল হলেও সংস্কৃতি ও পরিবেশের দিক থেকে তারা স্বতন্ত্র। এই সাতটি রাজ্যে জাতিগত এবং ধর্মীয় বৈচিত্র্য বিদ্যমান থাকলেও রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের অনেক মিল রয়েছে। ভূরাজনৈতিকভাবে এদের অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বৈচিত্র্যময় সামাজিক কাঠামো তাই সারা বিশ্বে অতুলনীয়।

এসব রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষই নানা আদিবাসী জাতি এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের। আসামের মাধ্যমে রাজ্যগুলো ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তবে  আগে এসব রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। স্থানীয় আদিবাসী রাজারা দীর্ঘদিন এসব অঞ্চল শাসন করেন। ফলে গারো, খাসিয়া, ত্রিপুরা, বোরো, মিজো আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যগুলোর অধিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল, মিজোরাম ও আসাম রাজ্য নিয়ে স্বাধীন ভূমি গড়ার দাবি তুলছে। সম্প্রতি ভারতের স্বাধীনতা দিবসে মণিপুর রাজ্যে কয়েক হাজার লোক নাগা পতাকা উড়িয়ে স্বাধীন ভূমির পক্ষে সমর্থন দিলে বিষয়টি বিশ্বাবাসীর নজরে আসে।

এ সাতটি রাজ্য চতুর্দিক দিয়ে অন্যান্য রাষ্ট্রের স্থলভাগ দিয়ে বেষ্টিত। ফলে ভারতের মূল ভূ-খণ্ডের সাথে এ রাজ্যগুলো যোগাযোগ রক্ষা করা হয় মাত্র  ৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সরু পথ দিয়ে। যাকে বলা হয় চিকেন নেক করিডোর। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিকে অবস্থিত। কিন্তু এ পথ দিয়ে যোগাযোগ সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। ফলে ভারত বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এ সাতটি রাজ্যের সাথে সড়ক, রেল ও নৌপথে ট্রানজিট স্থাপনে বিশেষভাবে আগ্রহী। কিন্তু বিশ্লেষকদের দাবি, এমন ট্রানজিট ভারতের স্বার্থ হাসিল করলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি বিবেচনায় তেমন সুফল আনতে পারবে না। 

সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশকে কেউ অস্থিতিশীল করতে চাইলে চারদিকে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়বে। প্রতিবেশী মিয়ানমার, ভারতের সেভেন সিস্টার্স, পশ্চিমবঙ্গ সব জায়গাতেই ছড়িয়ে পড়বে অস্থিরতা।' ভারতের এক সংবাদমাধ্যমে তার এমন আশঙ্কা প্রকাশের পর থেকেই নতুন করে আলোচনায় আসতে শুরু করে এই সেভেন সিস্টার্স। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ কোনো পরাশক্তির রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থে যেন উপলক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে যেন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে দেশটির সরকারকে সচেষ্ট থাকতে হবে। কেননা এ বিষয়ে একটি ভুল সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য চরম বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনা করেই প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: