• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

মোদিকে খুশি করতেই আদানির সাথে শেখ হাসিনার চুক্তি? (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৫:৪০, ১৯ আগস্ট ২০২৪

ফন্ট সাইজ

যতোই দিন যাচ্ছে ততোই লম্বা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ লুটপাটের ফিরিস্তি। একের পর এক সামনে আসছে আর্থিক খাতের নানা অসঙ্গতির চিত্র। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার পেছনে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী কিছু সমালোচিত ও বিতর্কিত দ্বিপাক্ষিক দেশবিরোধী চুক্তি। 

গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরশাসক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই তার নানা প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ডের খবর উঠে আসছে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে। এর মধ্যে অন্যতম ভারতের বৃহৎ কোম্পানি আদানি গ্রুপের সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আর সমালোচনা চলে আসছে টানা কয়েক বছর ধরেই।

সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ বিষয়ক চুক্তি নিয়ে ভারতীয় এক বিশিষ্ট সাংবাদিকের তথ্যবহুল বিশ্লেষণে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প আসলে কার স্বার্থে করা হয়েছে? কি রহস্য এর নেপথ্যে?- এমন অনেক গুরুতর বিষয় উঠে এসেছে এই বিশ্লেষণে। ফাঁস হতে শুরু করেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

সুব্রত বসুর সাথে এক টকশোতে ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক পরাঞ্জয় গুহঠাকুরতা বলেন, হাসিনা দেশের ন্যূনতম স্বার্থ উপেক্ষা করে একতরফাভাবে আদানিদের সুবিধা দিতেই এই চুক্তিতে গিয়েছিলেন। তার তথ্যে উঠে আসে, মূলত নরেন্দ্র মোদিকে খুশি করতেই হাসিনা আদানির সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি করেন। বিতর্কিত এই প্রকল্পের বাংলাদেশে না আছে কোনো প্রয়োজন, দেশের জন্য এতে না আছে কোনো স্বার্থ।

গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠিত ‘আদানি পাওয়ার লিমিটেড’ ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি। আদানির সাথে চুক্তির অধীনে বাংলাদেশকে অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি দাম দিতে হবে। যদিও এসব কয়লা যথেষ্ট নিম্নমানের। এসব কয়লা অস্ট্রেলিয়ার আদানি-মালিকানাধীন খনি থেকে ভারতের একটি বন্দরে সরবরাহ করা হবে যা ঝাড়খন্ডের গোড্ডা প্ল্যান্টে পাঠানো হবে। এরপর সেখান থেকে বিদ্যুৎ আসবে বাংলাদেশে। 

২৫ বছর মেয়াদী এ চুক্তির মাধ্যমে মুনাফা বৃদ্ধির বিশেষ সুযোগ নিয়েছে ভারতীয় কোম্পানিটি। গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে যাওয়ার পর কোনো বিদ্যুৎ ক্রয় করা না হলেও আদানিকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে বছরে প্রায় সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে বাংলাদেশকে। অর্থাৎ এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও বাংলাদেশকে এক তৃতীয়াংশ খরচ আদানিকে দিতেই হবে।

আদানিকে দেখা হয় মোদির অর্থদাতা হিসেবে। তাই হাসিনা আদানিকে এভাবে একতরফা সুবিধা দিয়ে মূলত মোদিকেই খুশি করেছেন বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ভারতের সহযোগিতায় হাসিনা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ। তবে হাসিনার অতিরিক্ত ভারত প্রীতি ও অন্যান্য দায়িত্বশীলদের নিরব ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে সেটি সফল হলেও শ্রীলংকায় তেমনটা হয় নি। জানা যায়, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা লঙ্কান সংসদীয় প্যানেলের সামনে দাবি করেছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেকে আদানি গ্রুপকে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প দেয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ায় সেটি আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।   

গত বছর ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করে, ২০১৮  সালে আদানি পাওয়ার সুবিধা পেতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে প্ল্যান্ট স্থাপনের আবেদন করেছিল। কিন্তু সেটি নীতি বহির্ভুত হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু পরবর্তীতে শুধু আদানি গ্রুপকে সুবিধা দিতে নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয় এবং বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বোর্ড আদানি পাওয়ারের আবেদনের অনুমোদন দেয়। সেসময় এমন সিদ্ধান্ত সরকার কেনো নিয়েছিলো তা হয়ত এখন সবার কাছেই স্পষ্ট।
 

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: