শেখ হাসিনার হাতে আর মাত্র ২৪ দিন, এরপর কি হবে? (ভিডিও)
সময় ফুরিয়ে আসছে শেখ হাসিনার। বৈধ উপায়ে আর মাত্র ২৪ দিন ভারতে থাকতে পারবেন বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ইতিমধ্যে ভারতে তিন সপ্তাহ কাটিয়ে ফেলেছেন হাসিনা। শেখ হাসিনা যখন দেশ থেকে পালান তখন তার কাছে শুধুমাত্র কূটনৈতিক লাল পাসপোর্টই ছিল। সাধারণ সবুজ পাসপোর্ট ছিল না। ভারতের ভিসা নীতি অনুযায়ী, যেসব বাংলাদেশির কাছে লাল পাসপোর্ট আছে তারা ভিসা ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে পারেন।
কিন্তু হাসিনার লাল পাসপোর্ট ও এখন কোনো কাজে আসবে না। কেননা এরমধ্যেই শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের সবার কূটনীতিক লাল পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ সরকার। যেহেতু হাসিনার লাল পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে; তাই নিয়ম অনুযায়ী তার ভারতে অবস্থানের সময় ফুরিয়ে আসছে।
ভারতের সরকারি সূত্র বলছে, বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করার পর শেখ হাসিনার এখন আর কোনো পাসপোর্ট নেই। শেখ হাসিনা গত ২১ দিন ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। সুতরাং হিসাব অনুযায়ী বৈধভাবে তিনি আর মাত্র ২৪ দিন ভারতে থাকতে পারবেন।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা চলছে। শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের কারণে ভারত থেকে বাংলাদেশে তার প্রত্যার্পণ ঝুঁকি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহে হাসিনার বিরুদ্ধে এই পর্যন্ত ৫১টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ৪২টি হত্যা মামলা। ফলে আপাতদৃষ্টিতে এসব মামলাকে 'রাজনৈতিক' বলে খারিজ করা কঠিন।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় পড়বে। কিন্তু চুক্তিটি ২০১৬ সালে সংশোধন হয়। সংশোধিত চুক্তির ১০(৩) ধারায় বলা হয়েছিল, কোনো অভিযুক্তের হস্তান্তর চাওয়ার সময় অনুরোধকারী দেশকে সেই সব অভিযোগের পক্ষে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ না-করলেও চলবে – শুধু সংশ্লিষ্ট আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেশ করলেই সেটিকে বৈধ অনুরোধ হিসেবে ধরা হবে।
সুতরাং, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যে সব মামলা দায়ের হয়েছে, তার কোনওটিতে যদি আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয়, তাহলে সেটির ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ভারত সরকারের কাছে তার হস্তান্তরের অনুরোধ জানাতে পারবে।
তবে দিল্লির পর্যবেক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনা ভারতের প্রায় ৫০ বছরের পুরনো বন্ধু। তাকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে চেষ্টা করবে দেশটি। তাই ভারত সরকার নানা ধরনের কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে সম্প্রতি আদালতে তোলার সময় দীপু মনি, আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান দের হেনস্তা করার বিষয়টি ভারত সামনে নিয়ে আসতে পারে। বিচারের জন্য বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হলে শেখ হাসিনারও যে একই পরিণতি হবে না, সেই নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে ভারত।
ফলে অনেক বিশ্লেষকই মনে করেন, যদি সত্যিই শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর করার জন্য ভারতের কাছে কোনো অনুরোধ আসে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বা সরাসরি তা নাকচ না করে দিল্লি দিনের পর দিন তা ঝুলিয়েও রেখে দিতে পারে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: