ঢাকার সঙ্গে সম্পর্কে পিছিয়ে পড়ছে দ্বিধায় থাকা ভারত! (ভিডিও)
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। পুরোনো জীর্ণতাকে ঝেড়ে ফেলে সময় এখন সংস্কারের। আর এ যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখাতে পারে প্রতিবেশী সহ বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো।
বাংলাদেশের পরিবর্তিত রজনৈতিক পরিস্থিতিতে সম্পর্ক মেরামতে তৎপর হচ্ছে বিদেশী কূটনীতিকরা। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান- সবারই এখন নজর সম্পর্ক মজবুত করার কার্যক্রমের দিকে। তবে ব্যতিক্রম শুধু ভারত। বাংলাদেশের সাথে ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব থাকার পরও শীতল হচ্ছে দুই দেশের সম্পর্ক।
৫ আগস্টের পর থেকেই বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে কুটনৈতিক তোরজোড় প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ। মার্কিন দূতাবাসের কনস্যুলার পরিষেবা পুনরায় চালু করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া চলতি মাসেই ঢাকা সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু- জানা গেছে এমন খবরও। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত বিবৃতি দিচ্ছে যুক্ররাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
সম্পর্ক উন্নয়নে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে বাংলাদেশের বিষয়ে রোডম্যাপ ও কৌশলপত্র প্রস্তুত করে ফেলেছে দেশটির সরকার। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে বাংলাদেশে দায়িত্বপালন করা সাবেক হাইকমিশনার ও কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এমনকি বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে এমন কাউকে হাই-কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার পরিকল্পনাও সামনে আনা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে ভিসা ফি ছাড়া বাংলাদেশিদের পাকিস্তানে যাতায়াতের মত সুবিধা।
পিছিয়ে নেই এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র চীনও। বাংলাদেশের জন্য যে কোনো সাহায্য দিতে প্রস্তুত চীন- এমন মন্তব্যই করেছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন নিয়মিত।
এই যখন অবস্থা তখন সম্পর্ক উন্নয়ন তো দূরে থাক, উল্টো আক্রমণাত্নক মন্তব্য ও অপ্রপচারেই ব্যস্ত ভারত। একের পর এক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য করছেন ভারতের অনেক কট্টর নেতা। দেশটির মূল ধারার গণমাধ্যমে এখনও চলছে বাংলাদেশ নিয়ে ভুলভাবে সংবাদ উপস্থাপন। হিন্দু শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করানোর মিথ্যা খবর ও সংখ্যালঘু অত্যাচারের অপপ্রচারে সয়লাভ দেশটির মিডিয়া পাড়া। এমনকি হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সাথে ড ইউনুসের সাক্ষাতকেও চালানো হচ্ছে উগ্রবাদী্র সাথে সরকারের বন্ধুত্ব বলে। এছাড়া সাম্প্রতিক বন্যা ইস্যু কিংবা সীমান্ত উত্তেজনা, সবকিছুতেই প্রকাশ পেয়েছে ভারতের বিদ্বেষ্মূলক মনোভাব।
বাংলাদেশের রাজনীতির পট পরিবর্তনের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে সঠিক কোনো সিদ্ধান্তই নিতে পারছে না ভারত। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা এড়িয়ে ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের ভিন্ন চিন্তা করার কোনো সুযোগ নেই। মূলত ৫ আগস্টের ঘটনার পর বাংলাদেশের রাজনীতি আর আগের অবস্থানে নেই এবং এই পরিস্থিতিতে এক পক্ষীয় কূটনীতি পরিচালনা করা যায় না এবং ভারতকে দ্রুত এ বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে। নইলে আখেরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে পিছিয়ে পড়বে দিল্লি, ক্ষত বাড়বে ভারতের।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: