কোন পথে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত উত্তেজনা? (ভিডিও)
বাংলাদেশে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকেই নতুন করে আলোচনায় এসেছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত উত্তেজনা। বহু বছর ধরে চলে আসা সীমান্তে নিজেদের গতানুগতিক আচরণ থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসছে বিজিবি। ভারতীয় বিএসেফ কে বিভিন্ন ইস্যু তে দেওয়া হচ্ছে কড়া জবাব, করা হচ্ছে সতর্ক।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের নানা মেরুকরণের মাঝে তাই রাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে নিরাপত্তা ইস্যু। আর এবার সে ইস্যুকে কেন্দ্র করে আরও তৎপর হওয়ার পরিকল্পনা করছে ভারত। এসেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী কে ‘বাংলাদেশ পরিস্থিতি’ বিশ্লেষণের বিশেষ নির্দেশনা।
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডারদের বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ‘অপ্রত্যাশিত’ যেকোনো কিছু মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
সম্প্রতি লখনৌতে এক কনফারেন্সে্র ভাষণে রাজনাথ বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিস্থিতি ভারতের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এসব বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। উসকানি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ যুদ্ধের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
রাজনাথের এই বক্তব্যে বাংলাদেশের নাম সরাসরি উল্লেখ না করা হলেও তিনি বাংলাদেশ পরিস্থিতির দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে ভবিষ্যত যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলে রাজনাথ কিসের ইঙ্গিত দিয়েছেন সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
গত কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে বাংলাদেশের কঠোর অবস্থান অস্বস্তিতে ফেলছে ভারতকে। তবে সম্প্রতি ভারতীয় বিএসেফের গুলিতে বাংলাদেশী কিশোরী স্বর্ণা দাস নিহতের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। হতাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দিল্লির কাছে বার্তা পাঠায় ঢাকা। বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়, সীমান্ত হত্যার এমন ঘটনা অনাকাঙ্খিত ও অযৌক্তিক। ভারত সরকারকে এ ধরনের জঘন্য কাজের পুনরাবৃত্তি রোধ করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷
সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সীমান্তে পুরোপুরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বিশেষ ভাবে আসাম রাজ্যের সীমান্তে কড়াকড়ি নজরদারি আরোপ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলা থেকে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও পরে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের রাজনৈতিক উত্তেজনার সরাসরি প্রভাব পড়ছে দেশ দুটির সীমান্ত এলাকাতে। তাই ভবিষ্যতের যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুই পক্ষকেই ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে, এবং জোর দিতে হবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার দিকেও।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: