• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

শ্রীলঙ্কায় বামপন্থিদের উত্থান ঘটানো কে এই দিশানায়েকে? (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৪:০১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফন্ট সাইজ

ছোট্ট দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রার্থী ৩৮ জন, কিন্তু কেউই পেলেন না শতকরা ৫০ ভাগ ভোট। ফলে দেশটির ইতিহাসে এই প্রথমবার ভোট গণনা গড়ালো দ্বিতীয় দফায় । এরপর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা হল অনুরা কুমারা দিশানায়েকের নাম। যেই দিশানায়েকের দল ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার ক্ষমতা তো দূরে থাক এর আগে বিরোধী দলেও ছিল না। আর তাই হয়ত দিশানায়েকের এই চমক দেখানো জয়কে অভিহিত করা হচ্ছে 'রাজনৈতিক ভূমিকম্প' হিসেবে।

২০২২ সালে যুগান্তকারী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শক্তিশালী রাজাপাকসাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে শ্রীলঙ্কায় 'বিশ্বস্ত মিত্র' খুঁজে আসছিলো চীন। সেই বিবেচনায় ভারত বিরোধী মনোভাব পোষণকারী দিশানায়েক ছিলেন চীনের পছন্দের তালিকায়। দিশানায়েকের জয়ের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কা প্রথমবারের মতো পেল শক্তিশালী বামপন্থি মতাদর্শের নেতৃত্বাধীন সরকার। আর উপমহাদেশের ভূ-রাজনীতির চালে আবারও পিছিয়ে পড়লো ভারত।

বিশ্লেষকদের মতে, শ্রীলঙ্কায় দিশানায়েকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ভারত এ অঞ্চলে আরও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়তে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক চিরবৈরী। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক মসৃণ নয়। মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন চীনপন্থি মোহাম্মদ মুইজু। আর এবার শ্রীলঙ্কায়ও চীনপন্থি দিশানায়েকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। ফলে স্বভাবিকভাবেই ভারতের কপালে আরও একটি চিন্তার রেখা যোগ হবে। 

শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর তামিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী। তবে শ্রীলংকার অনেক রাজনীতিকের মতো দিশানায়েকেও ছিলেন তামিল বিদ্রোহীদের বিপক্ষে। বিদ্রোহীরা শ্রীলংকার বাইরে আলাদা রাষ্ট্র চাইছে এমন অভিযোগে তাদের দমনের ব্যাপারে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন তিনি। অনেকেই মনে করেন দিশানায়েকে সম্পূর্ণরূপে সিংহলি বৌদ্ধ প্রাধান্যকে মেনে নিয়েই রাজনীতি করছেন। ফলে তার বিরুদ্ধে সমালোচনাও কম নয়।  

রাজনীতিতে অনেকটাই নতুন মুখ দিশানায়েকের উত্থানের গল্প রূপকথার মতো। ১৯৬৮ সালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে ১৭৭ কিলোমিটার দূরের অনুরাধাপুরা জেলার থামবুত্তেগামা গ্রামে জন্ম দিশানায়েকের। গ্রামীণ মধ্যবিত্ত এক পরিবারে জন্ম নেওয়া দিশানায়েকে কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক করেছেন। তবে ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।

দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদদের চেয়ে নিজেকে ভিন্নমাত্রায় উপস্থাপন করে জনমত আদায়ে সক্ষম হয়েছেন বামপন্থী এই নেতা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কার দুর্নীতি ও দুর্বল শাসনের কঠোর সমালোচক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। ১৯৯৫ সালে যোগ দেন জনতা বিমুক্তি পুরামুনার জেভিপি দলে।

২০১৪ সালে জেভিপির নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন দিশানায়েকে। পরবর্তীতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশটির সংসদে প্রধান বিরোধীদলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। জেভিপির বিরুদ্ধে দেশটিতে সহিংস রাজনীতিতে জড়ানোর ইতিহাস রয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টায় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, দিশানায়েকে সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এক বৃহত্তর জোট গড়ে তুলতে পেরেছেন। আর এটিই তাকে জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছে। 
 

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: