• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

মধ্যপ্রাচ্যে যেসব দেশ দখল করতে চায় ইসরাইল (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

ফন্ট সাইজ

গত সাত দশকে ফিলিস্তিনের ৯৫ শতাংশ এলাকা দখল করেছে জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল। বর্তমানে ফিলিস্তিন বলতে এক চিলতে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরকে বুঝায়। তবে শুধু ফিলস্তিনের ওপর দখলদারিত্ব কায়েম করেই ক্ষান্ত হবেনা ইসরাইল। বিশ্ববাসীর সামনে আবারও প্রকাশ পেলো ইসরাইলের নীল নকশা, উঠে আসলো বহু সমালোচিত বৃহত্তর বা গ্রেটার ইসরাইলের পরিকল্পনা। 

পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যখন সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ঠিক তখন সামনে এলো একটি তথ্যচিত্র।  চলতি মাসেই মুক্তি পেয়েছে ফ্রান্স-জার্মান ভিত্তিক ম্যাগাজিন আর্টে রিপোর্টেজ নির্মিত ‘ইন ইসরাইল: মিনিস্টারস অব কেয়াস’ নামের তথ্যচিত্রটি। এতে ইসরাইলের দুই উগ্রপন্থি ইহুদি নেতা জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ভবিষ্যতের ‘বৃহত্তর ইহুদি রাষ্ট্র’ প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছেন। যা নতুন করে আবারও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

তথ্যচিত্রে স্মোট্রিচ দাবি করেছেন, ইসরায়েলি রাষ্ট্র ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পাশাপাশি লেবানন, জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ অন্তর্ভুক্ত করবে। ইহুদি ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার সীমানা মিসরের নীলনদ থেকে ইরাকের ফোরাত নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। আর এটি ইসরায়েলি জনসাধারণের মধ্যেও সমর্থন পাচ্ছে।

'বৃহত্তর ইসরায়েল' মতবাদটি মূলত জায়নিস্ট ইহুদিদের দাবি, যেখানে তাদের পবিত্র বাইবেলে বর্ণিত ভূমির অংশ হিসেবে মিসর, জর্ডান, লেবানন, ইরাক, সৌদি আরবসহ সিরিয়ার বিশাল অংশ ইসরায়েলের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এই ‘বৃহত্তর ইসরাইল’ প্রকল্পের কথা অনেকদিন ধরেই আলোচনায় আছে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান সংঘাতের মধ্যে সে কথাটাই আরও স্পষ্ট করলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্মোট্রিচ। জেরুজালেম সেই রাষ্ট্রের রাজধানী হবে বলেও জানান তিনি। ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরও এই মতবাদকে পূর্ণ সমর্থন দেন।

পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের জন্য তেলআবিবের এই পরিকল্পনা মূলত ইহুদিবাদের প্রতিষ্ঠাতা থিওডোর হার্জলের দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। থিওডোর হার্জল ছিলেন একজন ইহুদি সাংবাদিক ও লেখক।  তাকে আধুনিক ইহুদি রাজনীতির জনক এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হের্জল 'বিশ্ব ইহুদি সংস্থা' গঠন করেন এবং বিভিন্ন দেশের ইহুদিদের অভিবাসী হিসেবে ফিলিস্তিনে নিয়ে আসেন ও একটি স্বতন্ত্র ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন।

২০২০ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির মুল স্লোগান ছিলো ‘’বৃহত্তর ইসরায়েল’’। যেখানে নেতানিয়াহু প্রতিশ্রুতি দেন পশ্চিমের অধিকাংশ এলাকা দখল করে ইসরাইলের সাথে একিভুত করার।  নেতানিয়াহু এটিও ঘোষণা করেছিলেন যে, তার পরবর্তী সরকারের মুল উদ্দেশ্য হবে জর্দান ভ্যালি এবং মৃত সাগরকে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের আওতায় নিয়ে আসা। তার বিরুদ্ধে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগের পরেও শুধুমাত্র এই কারনে লিকুদ পার্টির ভিতরে চরম মুসলিম বিরোধী মনোভাব গড়ে উঠে। যার কারনে নির্বাচনের দুই দুই বার হারের পরেও নেতানিয়াহু লিকুদ পার্টির প্রধান নির্বাচিত হন।

তবে অনেক বিশ্লেষকই মনে করেন গ্রেটার ইসরায়েল নকশাটি  মধ্য প্রাচ্যের জন্য শুধুই একটি জায়নিস্ট প্রকল্প নয়, এটি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিরও একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় সমর্থক ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার “ডিল অফ দ্যা সেঞ্চুরি”।  এর কৌশলগত উদ্দেশ্য হল মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন আধিপত্যকে বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি মধ্য প্রাচ্যে ভাঙ্গন তৈরি করা যাতে এই রাষ্ট্রগুলো ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভুত্ব মেনে নিতে বাধ্য হয়। 

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: