ইসরাইলকে ফাঁদে ফেলতে একজোট হচ্ছে সৌদি-ইরান ! (ভিডিও)
মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে সামাল দিতে বেশ কৌশলী পদক্ষেপ নিচ্ছে ইরান। ইসরাইল ও তার মিত্র দেশগুলোকে চাপে ফেলতে ইরান দিচ্ছে দূরদর্শীতার পরিচয়। মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে ইরানের জটিল ছকের জেরে প্রভাবিত হচ্ছে ইসরাইলের বৈদেশিক নীতিও।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই মুসলিম দেশ হলেও সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে বেশ কিছু ইস্যুতে মতপার্থক্য প্রবল। বিশেষ করে, সুন্নি ও শিয়া মুসলিম মতাদর্শ- দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় বাধা। আবার সামরিক শক্তিতে সৌদি আরব কিছুটা পিছিয়ে থাকায় দু দেশের মধ্যে টানাপোড়েন টাও দৃশ্যমান। তবে এবার ইসরাইলকে বিপদে ফেলতে সৌদিকে সাথে নিয়ে নতুন পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ইরান।
ফিলিস্তিন ও লেবানন ইস্যুতে এই দুই দেশের অবস্থান দুই মেরুতে। ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরোধিতায় ইরান সরাসরি নিজেদের জড়িয়ে ফেললেও একপ্রকার গাঁ বাঁচিয়েই চলছে সৌদি আরব। কৌশলগত বিভিন্ন কারণে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই মধ্যপ্রাচ্যের ইস্যু সমাধান করতে চায় সৌদি। কিন্তু এবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে একজোট হতে রিয়াদকে নিজেদের দিকে টেনে আনছে ইরান। এরই অংশ হিসেবে লোহিত সাগরে সৌদির সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর পরিকল্পনা করেছে ইরান। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। যদিও ইরানের এই দাবির ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি সৌদি আরব।
ইরানের দাবি সত্য হলে আঞ্চলিক দুই পরাশক্তি এবারই প্রথম এক সঙ্গে মিলে সামরিক শক্তি দেখাবে। এরই মধ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিরা মাঠে নেমে পড়েছেন। কীভাবে এই মহড়ার আয়োজন করা যায়, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন তারা। তবে এমন কিছু ঘটলে যে পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাবে নেতানিয়াহুর তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর তাই ইরানের করা ওই দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।
তবে বসে ইসরাইলের বিপদের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি যাতে এমন কোন পদক্ষেপ না নেয় সেজন্য তোরজোড় শুরু করেছে দেশটি। সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের নতুন প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে রিয়াদে পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। গাজার যুদ্ধের কারণে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি সম্ভাব্য ‘মেগা-ডিল’ স্থগিত হয়ে যায়। ওই চুক্তির অধীনে সৌদি আরবের ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা রয়েছে। বিনিময়ে প্রতিরক্ষা চুক্তি ও বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির সহায়তা পাবে সৌদি।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র চাইছে না এই যুদ্ধ আর দীর্ঘায়িত হোক। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইসরাইলের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, এখন সময় এসেছে গাজা সংঘাতের অবসান ঘটানোর। যদি সৌদি আরব ও ইরানের সামরিক ঐক্য আলোর মুখ দেখে এবং যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুর লাগাম টেনে ধরতে পারে তবে সহসাই হয়ত পালটে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক রাজনীতির হালচাল।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: