যে কারণে যুদ্ধই একমাত্র অপশন নেতানিয়াহুর (ভিডিও)
উদ্দেশ্য ছিলো জিম্মিদের মুক্ত করা। ইসরাইলে বসবাসকারী নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু সেদিকে নজর না দিয়ে একের পর এক যুদ্ধের পটভূমি তৈরি করে যাচ্ছেন ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেন ইয়ামিন নেতানিয়াহু। যার কর্মকান্ডে রীতিমত বিরক্ত তার সহযোগীরাই।
স্বেচ্ছাচারিতার চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন নেতানিয়াহু। এমনকি তার সাথে মতের মিল না হওয়ায় বরখাস্ত হতে হয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে। মন্ত্রীত্ব হারিয়ে নেতানিয়াহুর গোপন পরিকল্পনাও ফাস করে দেন তিনি। তার মতে, গাজায় ইসরায়েলি সেনা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই, অথচ নেতানিয়াহু সেখানে সেনা রেখে দখল বজায় রাখতে চান। কিন্তু কেন তার এই একগুঁয়েমি? যুদ্ধ বন্ধে কেন আগ্রহ নেই তার?
নেতানিয়াহু গাজা ও লেবাননে কেন যুদ্ধ জারি রেখেছেন তা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ইসরায়েল জিভ। সম্প্রতি ইসরাইলের সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম চ্যানেল টুয়েল্ভ কে এক সাক্ষাৎকারে জিভ বলেন, নেতানিয়াহু কেবল নিজের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ফায়দার জন্যই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জিভ আরও বলেন, “শুরু থেকেই যুদ্ধের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন নেতানিয়াহু। মূলত তার নির্দেশনার কারণেই একসময় জিম্মিদের মুক্ত করার প্রাথমিক লক্ষ্য গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ফায়দাকে অগ্রাধিকার দিয়ে যুদ্ধের নির্দেশনা দিতে থাকেন। তার বিরুদ্ধে যে কথা বলে তাকেই সরিয়ে দেন নেতানিয়াহু।''
বিশ্লেষকদের মতে, মূলত নিজের স্বার্থেই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু। ইসরাইলের ভূখণ্ড সম্প্রসারিত করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাতে ব্যস্ত তিনি। যুদ্ধ শেষ হলে জনপ্রিয়তা হারানোর পাশাপাশি বিভিন্ন মামলায় সাজা ভোগ করতে হবে নেতানিয়াহুকে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে করা জালিয়াতি, ঘুষ ও প্রতারণার তিনটি মামলা এখনও ঝুলছে। এসব মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় প্রায় ১৭ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন নেতানিয়াহু। এই মুহূর্তে যুদ্ধ শেষ হলে নিজ দেশেই জনপ্রিয়তা হারাবেন তিনি। তাই শক্তিশালী ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখিয়ে ইসরাইলের জনগণকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন নেতানিয়াহু।
চলমান যুদ্ধে ইসরাইলের অনেক সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। অযৌক্তিক এই সংঘাতে জড়িয়ে এখন হুমকির মুখে ইসরাইলিদের নিরাপত্তা। তবে এত কিছুর মাঝেও নিজের নিরাপত্তা ঠিকই নিশ্চিত করেছেন নেতানিয়াহু। নিজ বাসভনে ড্রোন হামলার পর থেকেই একটি ‘সুরক্ষিত বাঙ্কারে’ কাজ করছেন নেতানিয়াহু। এমনকি বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সভা করাও এড়িয়ে চলছেন তিনি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে শুধু নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের জন্যই প্রায় ৫,২৮,০০০ ডলারের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কঠিন পরিণতিকে মোকাবিলা করতে নেতানিয়াহু কতদিন এই স্বেচ্ছাচারিতা জারি রাখেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: