কাজে আসছে না মোদির ডোনাল্ড ট্রাম্প কার্ড? (ভিডিও)
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে ওঠে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রিয় সরকার। সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ট্রাম্পের কোম্পানিকেও ভারতে বড় বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়া হয়। ফলে ভারতীয়দের আশা ছিলো দ্বিতীয় মেয়াদে হয়ত নরেন্দ্র মোদির সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবেন ট্রাম্প।
কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা-আইসিই। তবে এই তালিকায় নেই বাংলাদেশের নাম। ভারত ছাড়াও ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া এবং ভেনেজুয়েলাও তালিকায় রয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই দেশগুলো সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সময়মতো ভ্রমণ নথি ইস্যু করা এবং নির্ধারিত ফ্লাইটে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আইসিই’র তালিকা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪ লাখ ৫০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজারই ভারতীয়। গত তিন বছরে প্রায় ৯০ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকালে আটক করা হয়েছে। এদের অধিকাংশই পাঞ্জাব, গুজরাট এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। বহু সংখ্যক ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অবস্থান বৈধ করার চেষ্টা করলেও এ প্রক্রিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ।
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ভারতের সাথে সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ সুইজারল্যন্ডের। ভারতকে দেওয়া সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের মর্যাদা বাতিল করেছে সুইজারল্যান্ড। এর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর সেখানে কাজ করা ভারতীয় সংস্থাগুলোকে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে চড়া হারে কর পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, কোনও দেশ যদি অন্য একটি দেশকে মোস্ট ফেভারড নেশন বা ‘এমএফএন’ মর্যাদা দেয়, তাহলে সেই দেশকে শুল্ক ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বিশেষ সুবিধা দিতে হয়। এতদিন সুইজারল্যান্ড ভারতকে এই সব সুবিধা দিতো। এখন এমএফএন সুবিধাটি বাতিল করার ফলে ভারতের পণ্য রপ্তানি ও দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বৃহত্তম প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া পরিচালনার পরিকল্পনা করেছেন। এই প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত আদেশপ্রাপ্ত হাজার হাজার ভারতীয় অভিবাসীকেও ফেরত পাঠানো হতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে ভারতের ডোনাল্ড ট্রাম্প কার্ড আদৌ কোন কাজে আসবে কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: