• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই নির্বাহী আদেশের ঝড় (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

ফন্ট সাইজ

'আমেরিকাকে পতন থেকে উদ্ধারে ঈশ্বর আমার জীবন বাঁচিয়েছেন। আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সোনালি যুগ শুরু হলো' এমনভাবেই জাতিকে স্বপ্নের কথা শোনালেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিহাস গড়ে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয় পাওয়ার ৭৭ দিন পর শপথ নিলেন তিনি। তবে বক্তব্যের মাধ্যমে আশার বাণি শোনালেও নিজ কার্যক্রমে তার ঠিকঠাক প্রতিফলন ট্রাম্প আদৌ করতে পারবেন কিনা সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

হোয়াইট হাউসে বসতে না বসতেই বিতর্কিত সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নতুন সমালোচনার জন্ম দিচ্ছেন ট্রাম্প। এবার যুক্তরাষ্ট্রকে পুনরায় প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন দেশটির ৪৭ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’ থেকে বেরিয়ে আসার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার কয়েকঘণ্টা পরই এই সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প সই করেছেন বলে জানিয়েছে বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মূলত ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গত এক দশকের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্বন নির্গমনকারী এই দেশটিকে এই জলবায়ু চুক্তির বাইরে নিয়ে যাওয়া হলো। এর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদেও ট্রাম্প বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্বন নির্গমনকারী যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছিলেন। এরপর ২০২১ সালে বাইডেন হোয়াইট হাউসে বসার ঠিক এক মাস পর আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তি বা প্যারিস চুক্তিতে ফিরে এসেছি্লো যুক্তরাষ্ট্র।

জলবায়ু চুক্তি থেকে প্রত্যাহারের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা অন্যায্য, একতরফা ও প্রতারণামূলক প্যারিস জলবায়ু চুক্তি প্রত্যাহার করেছি। চীন পরিবেশ দূষণ করার পরেও যখন শাস্তি পাচ্ছি না, তখন আমরা কেন নিজেদের শিল্পকে ধ্বংস করব?’ 

বিজ্ঞানীরা বরাবরই বলেছেন, পৃথিবীতে আসন্ন বিপজ্জনক জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া হতাশাজনক হলেও আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্রের শহর, রাজ্য ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো কম কার্বন নির্গমন নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসবে।’

২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বিশ্বের দুইশটির মতো দেশ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে একমত হয় যাকে অনেক পর্যবেক্ষকই ‘ঐতিহাসিক অর্জন’ বলে বর্ণনা করেন। ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে জলবায়ু চুক্তির বাইরে ইরান, লিবিয়া ও ইয়েমেনের মতো দেশগুলোর সঙ্গে এক কাতারে নেমে গেল যুক্তরাষ্ট্র। 

প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন। শপথ নেওয়ার প্রায় আট ঘণ্টা পর জারি করা একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে— সংস্থাটির করোনা মহামারির ভুল ব্যবস্থাপনা” এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে “অন্যায়ভাবে বেশি অর্থপ্রদানের” দাবি করা। এছাড়া চীন এই সংস্থায় কম অর্থ প্রদান করে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি অপ্রত্যাশিত নয়। ট্রাম্প কার্যত ২০২০ সাল থেকেই ডব্লিউএইচও’র বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। তবে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যখাতের নেতৃত্বস্থানীয় দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করবে। 
 

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: