ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে আত্নসমর্পণ করছেন মোদি! (ভিডিও)
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আশায় বুক বাধতে শুরু করেন ভারতীয়রা। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তার পুরোনো বন্ধু মোদির সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে এমনটাই ধারনা ছিলো অনেকের। তবে যতই দিন যাচ্ছে ততই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে ভারত। ট্রাম্প শপথ নেয়ার পর তার প্রশাসনের কাছে রীতিমত আত্নসমর্পন করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
হোয়াইট হাউসে বসার আগে থেকেই অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে হুমকি দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প। তবে নির্বাহী আদেশ জারির পর ট্রাম্পের মন রক্ষায় এক প্রকার ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মোদি। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ববসবাসরত প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। তবে, এই সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি হতে পারে, কারণ পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি কতজন ভারতীয় অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভিবাসীদের বেশির ভাগই পশ্চিম ভারতের। বিশেষ করে, পাঞ্জাব ও গুজরাটের তরুণ সমাজের অংশ তারা।
ভারতের এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনকে সন্তুষ্ট করার জন্য মোদির একটি কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। যার মূলে রয়েছে ভারতের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করা। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি এবং বাণিজ্যিক সংঘাত এড়ানোর লক্ষ্যে ভারত সরকার এই পথে হাঁটছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে।
শুধু অভিবাসী নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের মন জুগিয়ে চলতে হচ্ছে ভারতকে। ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতে ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানকে বড় বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছিলো মোদি সরকার। কিন্তু তাতেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ভারত। গত বছরের অক্টোবরে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলির এক শীর্ষ সম্মেলনে ডলারের বিকল্প মুদ্রার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই সন্মেলনেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের হাতে একটি মুদ্রার ছবি দেখা যায়। ব্রিকস কারেন্সির বাস্তবায়ানের সেই সম্ভাব্য পদক্ষেপ চিন্তায় ফেলে দেয় মার্কিনীদের।
এরপর ডিসেম্বরে ডলারের বদলে ব্রিক্সের নতুন মুদ্রা ইস্যুতে কড়া হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের হুমকির পরই ব্রিক্স মুদ্রার কার্যক্রম থেকে সরে আসে ভারত। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরও ট্রাম্প বলেন, '' যদি ব্রিকস দেশগুলো মার্কিন ডলারের পরিবর্তে অন্য কোন মুদ্রায় লেনদেনের পদক্ষেপ নেয় তাহলে মুশকিল হবে। ব্রিকস অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো এরকম কিছু করলে আমরা তাদের সঙ্গে ব্যবসায় কমপক্ষে ১০০ শতাংশ শুল্ক বসাব।"
ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম দফায় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার হলেও বর্তমান বাস্তবতায় বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ভারত। রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলে তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ ও পোশাকের মতো ভারতীয় শিল্প সমস্যায় পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: