যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুতিনের গুপ্তচর জাহাজ? (ভিডিও)
সম্প্রতি ইউরোপের বাল্টিক সাগর এলাকায় উপস্থিতি বাড়িয়েছে সামরিক সংস্থা ন্যাটো। তবে ন্যাটো সেনাদের নাকের ডগাতেই গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে রাশিয়ার জাহাজ। গবেষণার আড়ালে কার্যক্রম চালানো রাশিয়ার এই গুপ্তচর জাহাজের নাম ইয়ান্টার। যা এখন হয়ে উঠেছে পশ্চিমাদের মাথা ব্যাথার নতুন কারণ।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়ান্টার জাহাজটি গত নভেম্বরে প্রথম ব্রিটিশ জলসীমায় প্রবেশ করে। সেখানে সমুদ্রের তলদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর ঘোরাফেরা শুরু করে এটি। পরে একটি ব্রিটিশ সাবমেরিন থেকে সতর্কবার্তা পাওয়ার পর জাহাজটি দ্রুত যুক্তরাজ্য ছেড়ে ভূমধ্যসাগরের দিকে রওনা হয়।
কিন্তু এই ঘটনার পর আবারও সেই জাহাজ ব্রিটিশ জলসীমায় ফিরে আসে। এরপরই নড়েচড়ে বসে যুক্তরাজ্য। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সতর্ক করে কড়া বার্তা দেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি। হিলি বলেন, ''প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি আমার বার্তা পরিষ্কার, আমরা জানি আপনারা কী করছেন। সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধ করার জন্য আমি প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে সীমিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে একটি উন্নত এআই সিস্টেম মোতায়েন করা হবে। তবে ব্রিটেনকে রক্ষায় জোরালো পদক্ষেপ নিতেও আমরা পিছপা হব না। ''
এমন হুমকির পরও পুতিন তাতে গুরুত্ব না দেয়ায় আরও কঠোর অবস্থানে যায় যুক্তরাজ্য। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কর্তৃক প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়, ইয়ান্টারকে ট্র্যাক এবং পর্যবেক্ষণ করতে যুক্তরাজ্যের রয়েল নেভি এবং রয়েল এয়ার ফোর্স এর চৌকস দল মোতায়েন করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের পর, ইয়ান্টার আর কোনও বাধা ছাড়াই যুক্তরাজ্যের জলসীমা ছেড়ে চলে যায়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের দাবি, রাশিয়ার ইয়ান্টার জাহাজটি একটি প্রকাশ্য উস্কানি। মূলত যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতেই এটি পাঠিয়েছেন পুতিন। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক প্রায় ৫০০টি সমুদ্রতল তারের উপর নির্ভর করে। যার মধ্যে ৬০টিরও বেশি ব্রিটেনের মধ্য দিয়ে গেছে। যদি ভবিষ্যতে যুদ্ধের পরিস্থিত তৈরি হয় তাহলে রাশিয়া কিভাবে এসব তারে বিস্ফোরন ঘটাবে তারই ছক কষে রাখছে এই ইয়ান্টার জাহাজ।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সাগরের নীচে ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর মানচিত্র তৈরি করছে এই জাহাজ। এছাড়াও আরও একটি ভয়ংকর সতর্কবার্তা দিয়েছেন তারা। পারমাণবিক-শ্রেণীর একটি অ্যাস্টুট সাবমেরিন এই ইয়ান্টার জাহাজের নীচে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন অনেকে।
যুক্তরাজ্য সরকার এই ঘটনাটিকে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের আরেকটি উদাহরণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি কেবল যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাই না, দেশটির বিদেশী মিত্রদের জন্যও মারাত্নক এক হুমকি।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: