ট্রাম্পকে ইরানের প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি, শহীদি মৃত্যুকে বললেন মধুর

ছবি: সংগৃহীত
উপসাগরীয় দেশগুলোতে সফরের সময় ইরান সম্পর্কে বিভিন্ন কঠোর মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসময়, দেশটির বিরুদ্ধে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ পরিচালনার অভিযোগ আনেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর এবার কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ইরান কোনও ধরনের হুমকি কিংবা জুলুমের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের তেহরানবিরোধী এমন বক্তব্যের পরে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ইরান কোনো শক্তির সামনে মাথা নত করবে না।
১৪ মে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত এক ভাষণে পেজেশকিয়ান বলেন, ট্রাম্প মনে করছেন তিনি এখানে এসে বক্তব্য দিয়ে ইরানিদের ভয় দেখাতে পারবেন। ইরানিদের কাছে বিছানায় মৃত্যুবরণ করার চেয়ে শহীদ হওয়া অধিক মধুর। এসময় তিনি ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আমাদের ভয় দেখাতে চান? আমরা কোনও হুমকির কাছে মাথানত করি না।
এর আগে সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিল (জিসিসি)-এর সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে ইচ্ছুক। তবে এর জন্য ইরানকে সন্ত্রাসবাদে সহায়তা বন্ধ করতে হবে, রক্তক্ষয়ী প্রক্সি যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে ও স্থায়ীভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা ত্যাগ করতে হবে।
এদিকে, কাতারের রাজধানী দোহায় এক রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে ট্রাম্প আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি খুবই সংকটময়। তারা এমন পদক্ষেপ নিতে চান যা সঠিক ও যথাযথ হবে। তারা এমন কিছু করতে আগ্রহী যা লাখ লাখ মানুষের প্রাণ রক্ষা করতে পারে, কারণ এই ধরনের ঘটনা একবার শুরু হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী, তবে যদি ইরানের শীর্ষ নেতৃত্ব শান্তির প্রস্তাব গ্রহণ না করে, তাহলে তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। তখন তাদের উপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ করতে হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তিনি কখনোই ইরানকে পরমাণু অস্ত্র লাভের অনুমতি দেবেন না।
২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের অধীনে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে ২০১৮ সালে ট্রাম্প একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন, যার ফলে চুক্তিটি ভেঙে পরে। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর ক্রমাগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকে।
১৪ মে আবারও নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এসময়, ৬ ব্যক্তি ও ১২টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানায়, এই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান উৎপাদনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।
এদিকে, ওমানের মধ্যস্থতায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ৪ বার আলোচনায় বসেছে। এই আলোচনার মূল বিষয় ছিল ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মতবিরোধ সমাধান করতে নতুন আলোচনা হয় ১১ মে ওমানে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: