ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে গুপ্তহত্যার পরিকল্পনা ইরানের?

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলকে অস্থিতিশীল করতে দেশটির ভেতরে ব্যাপক হারে গুপ্তচরবৃত্তি বাড়িয়ে চলেছে ইরান। অর্থের লোভ দেখিয়ে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে ইসরাইলিদেরই। মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গুপ্তহত্যার ষড়যন্ত্র, স্পর্শকাতর তথ্যপাচারসহ নানা উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হচ্ছে ওই গুপ্তচরদের। এসব ষড়যন্ত্র নস্যাতে প্রতিনিয়ত হাই অ্যালার্টে থাকতে হচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে।
এরই মাঝে এবারে ইসরাইলের ভেতর গুপ্তহত্যা চালানোর ভয়াবহ এক ইরানি ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার দাবি জানিয়েছে তেল আবিব। মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে- এ ঘটনায় দুই ইসরাইলি নাগরিককে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত ও পুলিশ বিভাগ। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরাইল কাটযকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিল। ইসরাইলকে অস্থিতিশীল করতে ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলতেই চিরশত্রু ইরান এই অন্তর্ঘাতের ষড়যন্ত্র করছিল বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী ইসরাইলি গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ওই দুই গুপ্তচর হাইফার কেফার আহিম এলাকায় কাটযের বাড়ির আশেপাশে গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করছিল। সেখানে একটি নজরদারি যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছিল তারা। ইসরাইলিদের দিয়ে অন্তর্ঘাতমূলক ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়ায় গোয়েন্দাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন কাটয।
টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তির নাম রয় মিযরাহি ও আলমগ আতিয়াস। এর মাঝে মিযরাহি এ বছরের প্রায় পুরো সময় জুড়েই ইরানি নিয়োগকর্তাদের সাথে যুক্ত ছিলেন। এর ভেতর তিনি বেশ কয়েকবার ইরানিদের কাছে বিভিন্ন তথ্য পাচার করেন। এছাড়া ওই দুই গুপ্তচরের মাঝে বিস্ফোরক ও বিস্ফোরক যন্ত্রসহ একটি সন্দেহজনক ব্যাগ আদান-প্রদানের কথা জানিয়েছে গোয়েন্দারা। তারা বিশেষ অ্যাপ ও ফোনের মাধ্যমে ইরানি গোয়েন্দাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতো বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শিগগিরই এই দুই গুপ্তচরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করা হবে। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার আবেদন করবেন আইনজীবীরা। শত্রুপক্ষের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করলে নাগরিকদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে ধারাবাহিকভাবে সতর্কতা জানাচ্ছে সরকার।
এর আগে চলতি সপ্তাহেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের ওপর ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দুই ইসরাইলির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া এ বছরের জানুয়ারিতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম বিষয়ে ইরানের কাছে স্পর্শকাতর তথ্য সরবরাহের অভিযোগে দুই রিজার্ভ সেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারও আগে কেবল গত বছরের ডিসেম্বরে ইরানের গুপ্তচর হয়ে কাজ করার অভিযোগে প্রায় ৩০ ইসরাইলিকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের বেশিরভাগই ইহুদি।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: