• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

সহায়তার ঘাটতিতে দুর্ভিক্ষের শঙ্কায় গাজা

প্রকাশিত: ২২:০২, ২৪ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
সহায়তার ঘাটতিতে দুর্ভিক্ষের শঙ্কায় গাজা

ছবি: সংগৃহীত

প্রায় দুই মাস সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার পর খুব সীমিত পরিসরে গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে ট্রাক প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল৷ এই পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে সেখানে তৈরি হতে পারে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি৷

১১ সপ্তাহ পর গাজা উপত্যকায় আটকে থাকা মানুষের জন্য সহায়তা নিয়ে ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল৷ দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সমর্থন ধরে রাখতে সীমা অতিক্রম না করা গুরুত্বপূর্ণ৷’

ইসরায়েল সরকারের কোঅর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট ইন দ্য টেরিটরিজ জানায়, গাজার ইসরায়েল এবং মিশর সীমান্ত দিয়ে গত ২০ মে থেকে ২১ মে সময়ে মানবিক সহায়তা নিয়ে ১৯৮টি ট্রাক প্রবেশ করেছে৷ এর মধ্যে রয়েছে ময়দা, শিশুদের খাবার, চিকিৎসা সামগ্রী এবং ওষুধ৷

সমালোচকরা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় এই সহায়তা ‘নিতান্তই নগণ্য’৷ গাজা উপত্যকায় এই মুহূর্তে মোট ২০ লাখ লোক বসবাস করছেন৷ চলতি বছরের শুরুতে যুদ্ধ বিরতির সময়ে সাহায়তা সামগ্রী নিয়ে প্রতিদিন গড়ে ছয়শ ট্রাক প্রবেশ করতো৷

তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে সর্বশেষ প্রবেশ করা ট্রাকগুলো আটকে ছিল৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জার্মান দপ্তরের প্রধান মার্টিন ফ্রিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, মানবিক সহায়তার প্রথম চালান সরবরাহ করা হয়েছে৷

তিনি বলেন, ‘এটি একটি ছোট্ট আশার আলো তবে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম৷

হামাসকে দায়ী করছে ইসরায়েল

গত ২ মার্চ থেকে জারি রাখা এই ব্লকেডের বিষয়ে ইসরায়েল বলছে, জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের সদস্যরা সরবারাহ করা সহায়তা সামগ্রী লুট করে নিচ্ছিল৷ শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তারা সীমিত মাত্রায় সরবারাহ পৌঁছাতে দিচ্ছে৷

এদিকে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে প্রবেশ করেত যাওয়া ট্রাকগুলোর নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে৷ বোমা,  ভাঙ্গা রাস্তা এবং লুট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তাদেরকে৷ তাছাড়া জ্বালানির ঘাটতি থাকার কারণে লোকজন ময়দা নিতে পারছে না কিংবা হিমাগারগুলো চালু রাখা যাচ্ছে না৷

বাফার জোনে ট্রাকের সারি

সীমান্তের পেছনে তৈরি করা হয়েছেবিশাল বাফার জোন৷ কয়েক সপ্তাহে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা মিশর, ইসরায়েল এবং জর্ডান সীমান্তে এক লাখ ১৬ হাজার টন খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত রেখেছে৷ এদিকে, ইউএনআরডাব্লিউএ বলছে, খাদ্য সামগ্রী বোঝাই তিন হাজার ট্রাক যাত্রা করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে৷

তবে বিতরণ পয়েন্টে কার্যক্রম অনেক ধীর৷ বর্তমানে খোলা থাকা একমাত্র বর্ডার ক্রসিং কেরেম শালোমে খাদ্য সামগ্রীর ট্রাক বদল করতে হয়৷ এরপর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অনুমতির আগ পযন্ত সেখানে অপেক্ষা করতে হয়৷ তাদের এই যাত্রা আবার যেকোনো সময় থামিয়ে দেওয়া হতে পারে৷ তার মানে হলো, খাদ্য সামগ্রী নিয়ে অপেক্ষার সময় দীর্ঘায়িত হওয়া৷

সরবরাহের দায়িত্বে কে?

দ্য ইউনাইটেড নেশনস রেলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজি (ইউএনআরডাব্লিউএ) গাজায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে৷ গাজায় অবস্থিত জরুরি শিবিরগুলোর দায়িত্বে রয়েছে সংস্থাটি৷ তাছাড়া তাদের তিন হাজার ট্রাক সহায়তা নিয়ে প্রস্তুত হয়ে আছে৷

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ময়দা ক্রয় এবং পরিবহণের আয়োজন করে৷ সেইসাথে ২৫টি বেকারি পরিচালনা করে সংস্থাটি৷ জ্বালানির অভাবে বেকারিগুলো মার্চ মাসের শেষে বন্ধ করে দিতে হয়েছে৷ এরপর ২২ মে থেকে কিছু বেকারি আবার চালু করা হয়েছে৷

এদিকে ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষ ধরনের খাবার, টিকা, সার্জিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট সরবরাহের কাজ করে থাকে৷

এই সংস্থাগুলো মিশর, জর্ডান, আমিরাত এবং তুরস্কের রেডক্রিসন্টের সহায়তা পেয়ে থাকে৷ সেইসাথে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি, ইসলামিক রিলিফসহ বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থাও এগিয়ে এসেছে সহায়তায়৷

এদিকে, সহায়তায় কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও৷ তবে এসকল সহায়তা সামগ্রী যাচাইবাছাই করে থাকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী৷ ফলে গাজায় প্রবেশে সময়ের প্রয়োজন হয়৷

ইসরায়েল সরকার বলছে, গাজায় সহায়তা পৌঁছাতে মার্কিন সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস কোম্পানির সহায়তায় একটি সিকিউরিটি হাব গড়ে তোলা হবে৷ যদিও এমন পরিকল্পনার সমালোচনা করছে জাতিসংঘ৷

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন: