শেষ হতে চলেছে বেঁধে দেয়া সময়সীমা, এরপর কী করবেন ট্রাম্প? (ভিডিও)
গত ২ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। সেই দিনটিকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে আখ্যা দেন। তারপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া প্রায় সব পণ্যের ওপর কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন তা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুলাই। আর এরপর ট্রাম্প ঠিক কী করবেন, তা নিয়েই টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
তবে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে মার্কিন অর্থনীতি তো বটেই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোও। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ইউরোপের অর্থনীতি। চীন থেকে আসা বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতিযোগিতা ও ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের চাপের কারণে ইউরোপীয় গাড়ি শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এছাড়া ট্রাম্প ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কেন্দ্র স্থানান্তরের জন্য চাপ দিচ্ছেন, যা ইউরোপের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের বিষয়। ফলে ইউরোপকে নতুন বাণিজ্যিক পথ ও বিকল্প বাজারে প্রবেশের মাধ্যম খুঁজতে উৎসাহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে খোদ মার্কিন অর্থনীতি। মার্কিন অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য শুল্কারোপ করা হলেও পরিস্থিতি ঠিক তার উল্টো। বর্তমান শুল্ক হার বহাল থাকলে দেশটির বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আমেরিকান গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান চেজ ইনস্টিটিউট।
সম্প্রতি দেশটিতে বেড়েছে বেকারত্বের হারও। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে এই হার ঠেকেছে ৪ দশমিক ২ শতাংশে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য বিশ্লেষণ করে জেপি মরগান চেজ ইনস্টিটিউট পূর্বাভাস দিয়েছে, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে মাঝারি আকারের মার্কিন কোম্পানিগুলো ৮ হাজার ২৩০ কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এতে আরও বাড়তে পারে কর্মী ছাঁটাই। সঙ্গে রয়েছে বিনিয়োগ কমার শঙ্কাও।
এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমের এক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ৭ জুলাই থেকে বিভিন্ন দেশের কাছে চিঠি পাঠানো হবে, যেখানে কিছু দেশের জন্য বাণিজ্য চুক্তির নথি এবং অন্যদের জন্য শুল্ক আরোপের চিঠি থাকবে। তিনি ১২টি দেশকে চিঠি দিয়ে শুল্ক বা চুক্তির মধ্যে একটি বিকল্প বেছে নেওয়ার 'শেষ সুযোগ' দিচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলে আসছেন, এপ্রিলের শুল্কহার ফিরিয়ে আনা হতে পারে কিংবা তা আরও বাড়ানো হতে পারে। তবে যেসব দেশ আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে, তাদের জন্য সময়সীমা বাড়ানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। কিন্তু কারা এর আওতায় পড়বে, সেটি স্পষ্ট নয়। তবে আশার বিষয় হলো, এসব নতুন হার আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে, অর্থাৎ এখনো আলোচনার সুযোগ আছে। যদিও শেষ পর্যন্ত কোন দেশ কী অবস্থায় থাকবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষমতা ট্রাম্পের হাতেই।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: