জেদ্দায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স এমবিএসের বৈঠক

ছবি: সংগৃহীত
ইসরাইলের সাথে ইরানের ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষ হওয়ার পর এবার প্রথমবারের মতো সৌদি আরব সফরে গেলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। আল-জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, ৮ জুলাই তিনি জেদ্দায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। এদিন উভয় দেশের ভেতর গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক আলোচনা হয়। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাঘাই জানিয়েছেন, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও অন্যান্য সৌদি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আরাগচির আলোচনা বেশ ফলপ্রসূ হয়েছে।
সম্প্রতি ইসরাইল ও ইরানের ভেতর তীব্র সংঘর্ষ চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ৩টি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। তবে এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতেও তেহরান ও রিয়াদের ভেতরকার সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা থেমে যায়নি; বরং চলমান এই কূটনৈতিক সফর দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ও স্থিতিশীল করার পথে অগ্রসর করছে।
সৌদি আরবের সরকারি সংবাদ সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, আরাগচি ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স সম্প্রতি আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। মোহাম্মদ বিন সালমান আশা প্রকাশ করেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও, তিনি কূটনৈতিক সংলাপ দ্বারা বিরোধ নিষ্পত্তির পথকে পুনরায় সমর্থন জানান।
ইরানের এই উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিক এদিন সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি এদিন ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতি নিন্দা প্রদর্শনে সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ইরান উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আঞ্চলিক সংঘাত এবং একে অপরের বিরুদ্ধে অস্থিতিশীলতা ছড়ানোর অভিযোগ নিয়ে তেহরান ও রিয়াদের ভেতরকার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। তবে ২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তির ফলে দুই দেশ আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সম্মত হয়। সেই থেকে সৌদি ও ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
৭ জুলাই ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, তিনি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ দ্বারাই মতপার্থক্য নিরসন করতে পারে তেহরান, তবে তার দেশে হামলার পর আস্থার বিষয়টি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে আরাগচি বলেন, ইরান কূটনীতিতে আগ্রহী, তবে সংলাপের বিষয়ে তাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যদি শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তির ইচ্ছা থাকে তবে যুক্তরাষ্ট্রকে ন্যায্য একটি সমঝোতার প্রতি আগ্রহ দেখাতে হবে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: