• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

ইরানে গুপ্তচরবৃত্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইন: মৃত্যুদণ্ড ও সম্পত্তি জব্দ হবে অপরাধীদের

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ১৫ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৫:০২, ১৫ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ইরানে গুপ্তচরবৃত্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইন: মৃত্যুদণ্ড ও সম্পত্তি জব্দ হবে অপরাধীদের

ছবি: সংগৃহীত

ইরানে এখন থেকে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে দেওয়া হবে মৃত্যুদণ্ড। ইরানের সংসদে এ সংক্রান্ত একটি আইন সংশোধনী বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গৃহীত হয়। ইরান ফ্রন্ট পেজের তথ্য অনুসারে নতুন বিধান অনুযায়ী, কেউ যদি গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে এবং তার সম্পত্তিও জব্দ করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এই কঠোরতা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।

সংশোধিত আইনের আওতায় যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে শত্রু রাষ্ট্র বা গোষ্ঠীর পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি, গোয়েন্দা কার্যক্রম বা অন্য যেকোনো ধরনের গোপন অপারেশনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। একইসঙ্গে, রাষ্ট্র কর্তৃক তার সম্পত্তি জব্দ করা হবে। নতুন আইনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শত্রু রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত বা সামরিক সহায়তা প্রদান করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডসহ অন্যান্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। 

বিলটির সংশোধিত প্রস্তাবে অবৈধ যোগাযোগ প্রযুক্তি, যেমন ‘স্টারলিংক’, ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা বা ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপর স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। একইসঙ্গে, সাইবার হামলা, গুপ্তচরবৃত্তির উদ্দেশে ড্রোনের ব্যবহার এবং বিদেশি গণমাধ্যমে সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ করাকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

নতুন অনুচ্ছেদে আরও বলা হয়, কেউ যদি শত্রুপক্ষ বা বিদেশি সংস্থার কাছে তথ্য বা ভিডিও প্রেরণের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি বা জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করে, তবে তা এখন থেকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই ধরনের অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড এবং দোষী প্রমাণিত ব্যক্তিকে সরকারি বা জনসেবামূলক যেকোনো পদ থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণের ব্যবস্থা।

এছাড়া জাতীয় ঐক্য বা জনসাধারণের মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, এমন কোনো ভিডিও ধারণ বা প্রচার করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দেওয়া হবে এবং তাকে আজীবনের জন্য কোনো সরকারি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এদিকে ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়কে ‘শত্রু গণমাধ্যম’ চিহ্নিত করার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে এবং এসব অপরাধের বিচারে দ্রুত বিচার কাজ সম্পন্ন করার কথাও বলা হয়েছে।

এদিকে শত্রু রাষ্ট্র ও গোষ্ঠী চিহ্নিত করার দায়িত্ব সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলকে প্রদান করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল যারা ইতোমধ্যেই শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত, তাদের বাইরে অন্যান্য শত্রু রাষ্ট্র ও সংগঠন চিহ্নিত করার ক্ষমতা সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের হাতে থাকবে। পাশাপাশি, শত্রুদের নেটওয়ার্ক শনাক্ত করার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগ বা মিনিস্ট্রি অব ইন্টেলিজেন্সের ওপর।

মৃত্যুদণ্ড ব্যতীত অন্য যেকোনো শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। তবে মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সুযোগ থাকবে। ইরানে ইসরাইলের হামলার পর দেশটির বেশ কিছু গোপন প্রতিবেদনে দেশের ভেতরে বিদেশি গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের গভীর সক্রিয়তা প্রকাশ পায়। বিলটি গৃহীত হওয়ার পর ইরানের অনেক আইনজীবী এর সমালোচনা করেছেন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি এই বিষয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। তবে, ইরানের অন্যান্য আইনপ্রণেতারা মনে করছেন, বর্তমানে অঞ্চলটিতে টানাপোড়েন ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে এই ধরনের আইন প্রণয়ন জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

বিভি/আইজে

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2