ভারতে আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেল গ্রাম, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি (ভিডিও)
মুহূর্তেই লন্ডভণ্ড সবকিছু। পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে মাটির সঙ্গে মিশে গেলো একের পর এক ঘর।
৫ আগস্ট ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের থারালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পানির স্রোত এতই তীব্র ছিল যে, সামনে যা ছিল তার সবই ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ভয়াবহ এই আকস্মিক বন্যায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, পাহাড়ের গভীর খাদ বেয়ে নেমে আসা জলস্রোত আছড়ে পড়ছে একটি গ্রামের ওপর। শক্তিশালী স্রোতে একাধিক ভবন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে আর আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে প্রবল বেগে প্রথম স্রোতটি নেমে আসে। তার প্রায় ১৫ মিনিট পর আরেকটি স্রোত এসে গ্রামের বাড়িঘর, দোকান ও হোটেলেসহ সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ভেসে যান ক্যাম্পে থাকা নয়জন সেনা সদস্যও।
উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে সেনাবাহিন এবং জাতীয় ও রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়। নদী থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার জন্য মানুষকে আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হঠাৎ প্রবল বর্ষণে খির গঙ্গা নদীর উজানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনও এই বিপর্যয়ের জন্য ক্ষীরগঙ্গা জলাধারের কাছে ক্লাউডবাস্ট বা মেঘভাঙা বৃষ্টিকে দায়ি করেছেন।
ক্লাউডবাস্ট হলো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় আকস্মিকভাবে হওয়া অতি প্রবল বৃষ্টিপাত। যা অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে। সাধারণত, ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় এক ঘণ্টার মধ্যে ১০ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টিপাত হলে তাকে ক্লাউডবাস্ট বলা হয়।
যখন কোনো নির্দিষ্ট স্থানে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং হঠাৎ করে ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি আকারে ঝরে পড়ে, তখন ক্লাউডবাস্ট হতে পারে। সাধারণত, উষ্ণ আর্দ্র বাতাস এবং শীতল বাতাসের সংস্পর্শে এলে এই ধরনের বৃষ্টিপাত ঘটে।
এই ধরনের ঘটনা সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ঘটে থাকে এবং পার্বত্য অঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি দেখা যায়। উত্তরাখন্ডের মতো পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যা একটি সাধারণ দুর্যোগ। ভৌগোলিক গঠন ও বৃষ্টির পরিমাণের কারণে ভারী বৃষ্টিপাত ছাড়াও বিভিন্ন দুর্যোগের সাক্ষী হন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: