• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

সময় টিভির বর্তমান চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

প্রকাশিত: ২০:০৫, ১ আগস্ট ২০২৫

ফন্ট সাইজ
সময় টিভির বর্তমান চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

সময় টেলিভিশনের সাবেক এমডি আহমেদ জোবায়েরকে বাদ দিতে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে বর্তমান চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম ও এমডি শম্পা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে একথা জানান আহমেদ জোবায়েরের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

প্রথমে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ নিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা চলমান। এই মামলা নিয়ে সময় টিভির বর্তমান চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের আপন ভাই মোরশেদুল ইসলাম আরেকজন হলেন সময় টেলিভিশনের এমডি শম্পা রহমান যিনি সিটি গ্রুপের পরিচালক বটে— এই দুজনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের বিচারপতি ক্রিমিনাল প্রসেডিংস ড্র করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওনারা জেনে শুনে উদ্দেশ্যমুলকভাবে মহামান্য আদালতে কিছু নথি ও কাগজপত্র উপস্থাপন করেছেন যেগুলো ফ্রড (প্রতারণা) হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এবং ফ্রডোল্যান্ড ( প্রতারণামূলক কাজ) করার জন্য  মহামান্য আদালত তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল প্রসেডিংস ড্র ( ফৌজদারি মামলা করার জন্য) আদেশ দিয়েছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন এটা ফ্রড ইন দ্য হাইয়েস্ট লেভেল ( সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রতারণা)। অর্থাৎ একজন এমডিকে অপসারণ করার জন্য তারা ( মোরশেদুল ইসলাম ও শম্পা রহমান) কিছু চিঠি ইস্যু করেছিলেন। ওনারা দেখেন কত বড় ফ্রড ( প্রতারণা) করেছেন… ওনারা নিজেদের ঠিকানায় নিজেরা চিঠি ইস্যু করেছেন এবং কাগজপত্রে দেখিয়েছেন ২রা ডিসেম্বর চিঠি ইস্যু করেছেন, কিন্তু বাস্তবে চিঠি ইস্যু করেছেন ফেব্রুয়ারি মাসে। ওনারা অনেক নথিপত্র দিয়েছেন— যেগুলো জাল ফেব্রিকেটেড। এবং প্রতিটি ওনারা ইচ্ছাকৃতভাবে অসৎ উদ্দেশ্য পরিকল্পনামাফিক করেছেন। যে কারণে মহামান্য আদালত আমাদের বক্তব্যে সন্তোষ্ট হয়ে ওনাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সময় মিডিয়া লিমিটেড বনাম আহমেদ জোবায়ের শীর্ষক এই মামলায় আহমেদ জোবায়েরের আইনজীবী হিসেবে আরো আছেন সুপ্রিম বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনিও গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। 

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সময় টেলিভিশনের চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম ও এমডি শম্পা রহমান আদালতের সাথে প্রতারণা করেছেন। কেউ যদি আদালতে কোনো জাল বা প্রতারণামূলক ডকুমেন্ট সাবমিট ( নথি জমা) করে, তাহলে আদালত যেকোনো পক্ষের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে অথবা সুয়োমোটো ( স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে) তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা করার নির্দেশ দিতে পারে। 

দেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির পরিচালনা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে গেলো বছরের ১৪ আগস্ট থেকে। সময় মিডিয়া লিমিটেডের লাইসেন্সধারী ও প্রায় ১৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক আহমেদ জোবায়ের টেলিভিশনটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ফিরে পেতে এই মামলাটি করেন।  মূলত সময় মিডিয়া লিমিটেডের ‘বি’ গ্রুপের পরিচালকরা ‘এ’ গ্রুপের অন্যতম পরিচালক আহমেদ জোবায়েরকে এমডি পদ থেকে অব্যাহতি দিলে এই মামলার সূত্রপাত। প্রথমে গত আগস্টে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পরে ডিসেম্বরে আহমেদ জোবায়েরেকে পরিচালক পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন আহমেদ জোবায়ের। গত ১৪ মে একই বেঞ্চ পরিচালকের পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে সরানোর কর্মকাণ্ডকে বাতিল ঘোষণা করেন।  এসব কর্মকাণ্ড যাচাই করতে গিয়ে আদালতের কাছে সময় টিভির চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম ও এমডি শম্পা রহমানের নানা জাল জালিয়াতির বিষয়টি উন্মোচিত হয়।  তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এই ফৌজদারি মামলা দায়েরের আদেশ দিলেন।

জানা গেছে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সময় মিডিয়া লিমিটেড একটি অতিরিক্ত সাধারণ সভা( ইজিএম) করে আহমেদ জোবায়েরকে পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করে। নিয়ম অনুযায়ী ইজিএম করার বিষয়টি আহমেদ জোবায়েরসহ সব পরিচালককে তিন সপ্তাহ আগে জানাতে হবে। কিন্তু সময় কর্তৃপক্ষ সেটি না করে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। 

তারা আদালতকে জানিয়েছে ইজিএম—এর বিষয়টি আহমেদ জোবায়েরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি ইজিএম— এ হাজির হননি। ফলে তার অনুপস্থিতিতে অন্য পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডারদের সিদ্ধান্ত মতে আহমেদ জোবায়েরকে পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করা হয়। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হলো ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইজিএম করলেও আহমেদ জোবায়েরের নামে চিঠি পাঠিয়েছে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে। চিঠির প্রাপকের ঠিকানায় আহমেদ জোবায়েরের নাম ঠিকানা লিখলেও চিঠিটি তারা পাঠিয়েছে অডিট ভবনের পোস্ট অফিস থেকে গুলশান পোস্ট অফিসে। গুলশান পোস্ট অফিস মূলত সিটি গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এলাকায়। আহমেদর জোবায়েরের ঠিকানা সেটি নয়। 

আহমেদ জোবায়েরর আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এই জালিয়াতির বিষয়টি তথ্য প্রমাণসহ আদালতের নজরে আনলে আদালত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের ইজিএম— এর সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। এছাড়া একই দিনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম— এর সিদ্ধান্তের ওপরও স্থগিতাদেশ দেন আদালত। এর ফলে, কোম্পানির আটিকেল অব এসোসিয়েশন বদল করার সিদ্ধান্ত  স্থগিত থাকবে এবং আহমেদ জোবায়ের পরিচালক পদে বহাল থাকবেন বলে আদেশ দেন।  

এই মামলায় আহমেদ জোবায়েরের আইনজীবী প্যানেলে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যরিস্টার কায়সার কামাল ছাড়াও আরো আছেন ব্যারিস্টার আহমেদ নাকিব করিম, ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব, ব্যারিস্টার রাফিউল মাহমুদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট ফয়সাল আল মাহমুদ।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: