মালয়েশিয়ায় আলোচনা শেষ, থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়ে গেছে

ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের নানা অঞ্চলে যেন সংঘাতের এক নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। কোথাও যেন শান্তির ছোঁয়া নেই। সব জায়গায়ই অশান্তি বিরাজ করছে। কিছুদিন আগে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে সংঘর্ষ বাঁধে। তবে এই সংঘর্ষের পর উভয় দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে থাই ও কম্বোডিয়ান শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৈঠক শেষ হলেও দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা এখনো চলমান রয়েছে। উভয় দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে চলেছে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতির কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে না।
আল-জাজিরা জানাচ্ছে, উভয় দেশের ৫ দিনব্যাপী সংঘর্ষের পর মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছে। এই সংঘর্ষে উভয় দেশের অন্তত ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এদিকে দুই লক্ষাধিক মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাত চলাকালে কাম্বোডিয়ার গোলাবর্ষণে থাইল্যান্ডের সিসাকেত প্রদেশে ৮ জন নিহত হন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ২৩টি দেশের কূটনীতিক ও সামরিক প্রতিনিধিরা ওই এলাকা পরিদর্শন করেন।
থাই পার্লামেন্টের এক সদস্য বলেন, পরিস্থিতি এখনও সম্পূর্ণভাবে শান্ত হয়নি। যে কোনো সময় আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি জানান, সীমান্ত অঞ্চলে থাই ও কাম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী একে অপর থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরত্বে অবস্থান করছে।
থাইল্যান্ডে প্রায় ২০,০০০ মানুষ এখনও নিজ বাড়িতে ফিরতে পারেননি। অনেকেই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র এবং স্থানীয় বৌদ্ধ মঠে বসবাস করছেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, তিনি হাঁসদের খাওয়াচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে বিস্ফোরণ শুরু হয়। তার এক বন্ধু রকেট হামলায় প্রাণ হারান। তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না। বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে তিনি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণের জন্য যেন নিজের অনুভূতিও হারিয়ে ফেলেছিলেন।
এদিকে জেলা কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, সেনাবাহিনী এখনও সীমান্তে অবস্থান করছে। সবাই একে অপরের দিকে সন্দেহের মনোভাব পোষণ করে রেখেছে। স্থানীয় জনগণও ভয়ভীতিতে রয়েছে। হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। তার স্ত্রী, দুই সন্তান এবং শ্বশুর-শাশুড়িসহ সবাই এখন গৃহহীন।
মালয়েশিয়ায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা শেষ হলেও তাতে বড় কোনো সাফল্য বা অগ্রগতি দেখা যায়নি। চীনের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও পর্যবেক্ষক হিসেবে এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করে। তবে যতক্ষণ সীমান্ত থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার না করা হচ্ছে এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি না হচ্ছে, ততক্ষণ সাধারণ মানুষের ভীতি দূর করা প্রায় অসম্ভব।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: