ভোট চুরির গোমর ফাঁস করলেন রাহুল গান্ধী! (ভিডিও)
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’ করে নির্বাচনে জেতার অভিযোগ তুলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বিজয়ী করতে নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় অন্তত ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ভোট চুরি হয়েছে বলে বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি।
৭ আগস্ট দিল্লিতে কংগ্রেস সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ধরেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের নিজস্ব একটি তদন্তের প্রতিবেদন পেশ করে রাহুল দেখান, গত নির্বাচনে ৪০ হাজার ভোটারের ভুয়া ঠিকানা ছিলো। ডুপ্লিকেট ভোটারের সংখ্যা ছিলো প্রায় ১২ হাজার। বহু ভোটারের নাম একাধিক বুথে নথিবদ্ধ। সাড়ে ১০ হাজার ভোটারের ঠিকানা এক। এছাড়া ছবিহীন ভোটার কার্ডের সংখ্যা ছিলো ৪ হাজারের বেশি।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের উদাহরণ টেনে রাহুল বলেন, যেখানে লোকসভা ভোটে ‘ইন্ডিয়া’ জোট ৩০টি আসনে জয় পায়, সেখানে বিধানসভা ভোটে বিরোধীরা ৫০ আসনেও পৌঁছাতে পারেনি। এর প্রধান কারণ মাত্র পাঁচ মাসে ৪০ লাখ ভোটারের নাম তালিকায় তুলে দেওয়া হয়। একইভাবে কর্ণাটক রাজ্য নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন রাহুল। তিনি জানান, বেঙ্গালুরুর মহাদেবপুরা বিধানসভায় ভোট চুরির ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। সেখানে এক লাখের বেশি ভোট চুরি হয়েছে। ওই একটি বিধানসভা কেন্দ্রের কারণে কংগ্রেস লোকসভা আসনটি মাত্র ৩২ হাজারের ব্যবধানে হেরে যায়।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর এমন অভিযোগ যে নিছকই মনগড়া নয়, সেটি উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনেও। লোকসভার বিরোধী নেতার অভিযোগ সরেজমিন যাচাই করতে গিয়ে ওই গণমাধ্যম দাবি করে, কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনের একটি ঠিকানায় মাত্র ১৫০ বর্গফুটের এক ঘরে সত্যিই ৮০ জন ভোটারের নাম নথিভুক্ত করা রয়েছে।
রাহুল গান্ধীর এসব দাবি ভারতের রাজনৈতিক মেরূকরণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে কংগ্রেসের অনেক নেতা রাহুলের মন্তব্যের সমর্থন করেছেন। দলটির সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতিদের সঙ্গে কথা বলবেন। কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেছেন, রাহুল গান্ধী ভোট চুরির যে বিষয়টি জাতির সামনে খোলাসা করেছেন, তা নিয়ে তারা প্রচারণা চালিয়ে যাবেন।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল জানিয়েছে, দলীয় প্রতিটি রাজ্য ইউনিট রাহুল গান্ধীর এই যুগান্তকারী সংবাদ সম্মেলন পর্দার মাধ্যমে প্রদর্শন করবে। এছাড়াও রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন শরদ পাওয়ার, পরাগত সিং ও ধর্মেন্দ্র রাঠৌর সহ একাধিক নেতা।
তবে রাহুলের এসব অভিযোগকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। কমিশন রাহুলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, শপথ গ্রহণ করে হলফনামা দিয়ে ইসির কাছে অভিযোগ জানাতে, না হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: