পেরুর উপকূলে অস্বাভাবিক ঢেউ: শতাধিক বন্দর বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত
এবার পেরুর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের কারণে চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপক অসুবিধায় পড়েছে মানুষ। বিপুল শব্দ করে ঢেউগুলো ক্রমাগত এসে উপকূলের শান্তি বিনষ্ট করে দিচ্ছে। উপকূলবর্তী বাড়িঘরগুলো ঢেউয়ের তাণ্ডবে দুলতে শুরু করেছে। ফলে মানুষের মুখে উদ্বেগের ছাপ আর চোখে ভীতি দেখা দিয়েছে। এই অস্বাভাবিক সাগরের উত্তেজনা পুরো এলাকাকে যেন ভয়ে জর্জরিত করে তুলেছে।
রয়টার্সের তথ্যমতে, সাগরের তাণ্ডবের কারণে গত ২৫ আগস্ট পেরুর উপকূলবর্তী অঞ্চলের ১০০টিরও বেশি বন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে সতর্কতা জারি করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। অস্বাভাবিক ঢেউয়ের কারণে স্থানীয় জনজীবন ও মৎস্যজীবীদের জীবিকা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের একটি প্রাণঘাতী অ্যান্টিসাইক্লোনকে দায়ী করেছে পেরুর জাতীয় আবহাওয়া ও জলবিদ্যুৎ সংস্থা। ওই এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে প্রবল সাগরের ঢেউ আঘাত হানার পর এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পেরুর নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রবার্তো কার্লোস তেল্লো বান্সেস গত ২৪ আগস্ট লামবায়েক প্রদেশের সান হোসে অঞ্চলের উপকূল এলাকায় একটি জাহাজ রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। নৌবাহিনী জানায়, ওই নাবিক সমুদ্রে পড়ে গিয়েছিলেন। তার নিথর দেহ প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হয়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় অর্থাৎ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের অ্যান্টিসাইক্লোনের কারণে উপকূলীয় এলাকায় বিভিন্ন ধরনের স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এদিকে জনগণকে উপকূলীয় অঞ্চল ও পানিতে যাতায়াত করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।
এমন পরিস্থিতিতে জেলেরা আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা সমুদ্রের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন এবং দ্রুত মাছ ধরার কাজে ফেরার দিন গুনছেন। এদিকে পেরুর নৌবাহিনী জানিয়েছে, এই প্রতিকূল পরিস্থিতি আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
এই অ্যান্টিসাইক্লোনটি সর্বশেষ দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন বন্দরগুলোতে ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে প্রভাবিত করেছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই প্রবল ঢেউ ও ঝড়ের পেছনে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে। ২০২৪ সালের শেষ দিকে এবং ২০২৫ সালের শুরুতে চিলি, পেরু ও ইকুয়েডরের অনেক বন্দরে তীব্র ঝড়ের কারণে জাহাজ চলাচল কয়েক দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: