ক্ষমতার শীর্ষ থেকে কারাগারের পথে
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ১৫ বছরের কারাদণ্ড
ছবি: নাজিব রাজাক (ফাইল ফটো)
দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রভাব, ক্ষমতার দাপট আর আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়ালেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। দেশটির আদালত তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন—যা মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক যুগান্তকারী রায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দেওয়া এই রায়ে অর্থ পাচারের ২১টি অভিযোগ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের চারটি অভিযোগে নাজিব রাজাককে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত।
রায়ে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল ১এমডিবি থেকে প্রায় ২ দশমিক ২ বিলিয়ন রিঙ্গিত নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নিয়েছিলেন নাজিব। এই অর্থ আত্মসাৎ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চরম অপব্যবহারের নজির বলে মন্তব্য করেন বিচারক।
রায় ঘোষণাকালে বিচারক কলিন লরেন্স সেকুয়েরাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আসামিপক্ষ এই মামলাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও আদালতে উপস্থাপিত অকাট্য ও অখণ্ডনীয় প্রমাণ সেই দাবি সম্পূর্ণভাবে খণ্ডন করেছে।’
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, এক দশকেরও বেশি সময় আগে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং ১এমডিবির উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নাজিব রাজাক রাষ্ট্রীয় তহবিলকে ব্যক্তিগত সম্পদে রূপান্তর করেন। সেই অপরাধেই আদালত তাকে কঠোর সাজা দেন। রায়ে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় যা একসঙ্গে কার্যকর হবে।
এর আগে, ২০২০ সালে দুর্নীতির আরেক মামলায় নাজিব রাজাক ১২ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, যা পরে কমিয়ে ছয় বছরে নামিয়ে আনা হয়। সর্বশেষ এই রায়ের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বড় মামলায় দণ্ড কার্যকর হলো।
বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় শুধু একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শাস্তি নয়—বরং মালয়েশিয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্ত বার্তা। সূত্র: বিবিসি
বিভি/এমআর




মন্তব্য করুন: