• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ধর্মঘটে আটকা পর্যটকরা, সড়কের চাপ আকাশে

প্রকাশিত: ১৭:২৪, ৬ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ২০:১৬, ৬ নভেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
ধর্মঘটে আটকা পর্যটকরা, সড়কের চাপ আকাশে

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের গণপরিবহন, মালবাহী ট্রাক এবং দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় পরিবহনসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর নেতারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ রিকশায় কিংবা বিকল্পভাবে পৌঁছাচ্ছেন গন্তব্যে। তবে শনিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীতে বিআরটিসি’র কিছু বাস রাস্তায় চলতে দেখা গেছে।

পরিবহন নেতাদের ডাকা এই ধর্মঘটে সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন কক্সবাজারে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা। তারা বলছেন, দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। আব্দুল মোমেন নামে একজন পর্যটক বাংলাভিশন ডিজিটালকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার ছাড়ার কথা ছিলো কিন্তু হঠাৎ ডাকা ধর্মঘটে কাউন্টার থেকে জানানো হয় দূরপাল্লার বাস ছাড়বে না। ততক্ষণে আমি হোটেল রুমও ছেড়েছি। কী করবো বুঝতে পারছিলাম না। অনেক কষ্টে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এসেছি। শুক্রবার থেকেই এখানে অবস্থান করছি। কবে ধর্মঘট ছাড়বে বুঝতে পারছি না। এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে দিতে টাকাও প্রায় শেষ।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সেক্রেটারি আবুল কাশেম সিকদার বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, ত্রিশ হাজারেরও বেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন কক্সবাজারে। এছাড়া ‍বিগত দুই দিনে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি পর্যটক কক্সবাজারে আসার কথা ছিলো, কিন্তু তারা আসতে পারেনি।

আবুল কাশেম সিকদার বলেন, জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে কক্সবাজারের আটকে পড়া পর্যটকদের নিজস্ব গন্তব্যে ফেরাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এই বিষয়ে কক্সবাজার রিজিয়ন ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, পর্যটকদের ফেরাতে জেলা পুলিশ কাজ করছেন। আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করছি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আটকা পড়া পর্যটকরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

জানা গেছে, কিছু যানবাহন জেলাকেন্দ্রিক সড়ক বা চট্টগ্রামের পথে চলাচল করছে। এসব যানবাহনে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েক গুণ টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে।

হঠাৎ করে পরিবহন ধর্মঘট ও পরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির কারণে খাগড়াছড়িতে ঘুরতে আসা হাজারো পর্যটক চরম বেকায়দায় পড়েছেন। শুক্রবার থেকে খাগড়াছড়ির সংগে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য এলাকার দূরপাল্লা যাত্রী ও পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। সেই সংগে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকগামী যানবাহনের প্যাকেজ অনুপাতে ৫০০ থেকে ৬০০টাকা ভাড়া বাড়িয়েছে পরিবহন সংগঠনগুলো। যানবাহন বন্ধ থাকায় পর্যটকরা সমতলেও ফিরতে পারছেন না।

খাগড়াছড়ি জিপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দেবনাথ ও পার্বত্য যানবাহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কিশলয় তালুকদার স্বাক্ষরে এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক পর্যটকবাহী পিকআপের ভাড়া ৫ হাজার ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা এবং সাজেকে এক রাত্রি যাপন ৭ হাজার ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে।

এছাড়া সাজেকে এক রাত্রি যাপন এবং খাগড়াছড়ি পর্যটন স্পট ভ্রমণ যেখানে আগে ছিল ৯ হাজার ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার ৪০০ টাকা ও সাজেকে দুই রাত্রি যাপন এবং খাগড়াছড়ি ভ্রমণ ১২ হাজার ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ১৩ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে। ফলে যারা এখনও সাজেক বা খাগড়াছড়িতে অবস্থান করছেন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

সেন্টমার্টিনে পর্যটক আটকা পড়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছর অক্টোবর ১৯ তারিখ থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কক্সবাজার এবং টেকনাফ জেলা প্রশাসন।

বাড়তি ভাড়ায় বিমানে পর্যটকরা ফিরছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বিমানে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বিষয়টি তেমন নয়। রাউন্ড দ্যা ইয়ার মূলত বিমান ভাড়ার দশটি স্ল্যাব নির্ধারণ করা থাকে, লো ফেয়ার থেকে উচ্চফেয়ার পর্যন্ত। যখন টিকিটের চাপ বাড়তে থাকে তখন লো ফেয়ারের স্ল্যাব শেষ হয়ে উচ্চমানের ফেয়ারের দিকে উঠতে থাকে, ফলে আপাতদৃষ্টিতে ভাড়া বাড়তে থাকে বলে মনে হলেও এটা পূর্বনির্ধারিত। বিগত দু’দিনে বিমানে যাত্রী কিছুটা বেড়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
 
এই বিষয়ে নভোএয়ারের হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং মেসবাহ উল ইসলাম বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই টিকিটের চাপ থাকে। এর সংগে যোগ হয়েছে পরিবহন ধর্মঘট। ফলে যাত্রী চাপ কিছুটা বেড়েছে। বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, লো রেটের স্ল্যাবের টিকিট শেষ হলে স্বাভাবিকভাবেই উচ্চমানের স্ল্যাবে ভাড়া বাড়বে। এটা শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও এই পদ্ধতি রয়েছে।

বিভি/এমএস

মন্তব্য করুন: