• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

পুতিনের `মস্তিষ্ক` খ্যাত আলেকজান্ডার দুগিনের মেয়ে বিস্ফোরণে নিহত

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ২২ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১২:২০, ২২ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
পুতিনের `মস্তিষ্ক` খ্যাত আলেকজান্ডার দুগিনের মেয়ে বিস্ফোরণে নিহত

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মেয়ে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। সন্দেহ করা হচ্ছে গাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করছে যে কমিটি তারা বলছে রাজধানী মস্কোর বাইরে রাস্তায় এক বিস্ফোরণে দারিয়া দুগিনা নিহত হয়েছেন।

ধারণা করা হচ্ছে তার পিতা রুশ দার্শনিক আলেকজান্ডার দুগিন, যিনি "পুতিনের মস্তিষ্ক" হিসেবে পরিচিত তাকে হত্যা করার জন্য এই হামলা চালানো হয়েছিল। মি. দুগিন একজন প্রখ্যাত উগ্র-জাতীয়তাবাদী মতাদর্শী দার্শনিক যিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়।

দুগিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা?

আলেকজান্ডার দুগিন এবং তার কন্যা দারিয়া মস্কোর কাছেই একটি উৎসব অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে দার্শনিক দুগিন বক্তব্য রাখেন। এই অনুষ্ঠানটিকে শিল্প-প্রেমীদের জন্য একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করা হয়। রুশ কবি আলেকজান্ডার পুশকিন একসময় যে জাখারোভা এস্টেটে থাকতেন সেখানে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।
তাদের দুজনেরই অনুষ্ঠান শেষে একসঙ্গে একই গাড়িতে করে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু খবরে বলা হচ্ছে মি. দুগিন একেবারে শেষ মূহুর্তে মেয়ের সঙ্গে না ফিরে আলাদা গাড়িতে করে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।

টেলিগ্রামে পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া গাড়িটি যেখানে পড়ে আছে, রাশিয়ার জরুরি সার্ভিসের লোকেরা সেখানে এসে পৌঁছালে মি. দুগিন সেদিকে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে দারিয়া দুগিনা ঘটনাস্থলেই মারা যান। তারা বলেছেন গাড়িটিতে আগুন ধরে যাওয়ার আগে সেখানে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। ফরেনসিক ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। দারিয়া দুগিনা রাশিয়ার একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক।

কে এই দুগিন?

মস্কো থেকে বিবিসির ভিল ভার্নন বলছেন আলেকজান্ডার দুগিন কোনো রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা নন, কিন্তু তিনি রাশিয়ার রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার পশ্চিমা-বিরোধী ও উগ্র-জাতীয়তাবাদী দর্শন রাশিয়ায় প্রভাবশালী রাজনৈতিক মতাদর্শে পরিণত হয়েছে যা প্রেসিডেন্ট পুতিনের সম্প্রসারণবাদী পররাষ্ট্র নীতি তৈরিতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের ব্যাপারেও মি. দুগিনের দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখনও এই হামলার দায়িত্ব কেউ স্বীকার করেনি। তবে রুশপন্থী স্বঘোষিত দোনেৎস্ক পিপল'স রিপাবলিকের প্রধান ডেনিস পুশিলিন এই হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন।

টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, " ইউক্রেন সরকারের সন্ত্রাসীরা আলেকজান্ডার দুগিনকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার চেষ্টা করছে। তারা তার কন্যাকে গাড়িতে উড়িয়ে দিয়েছে। আমরা দারিয়াকে স্মরণ করছি। সে সত্যিকারের একজন রুশ কন্যা।"
বিবিসির উইল ভার্নন বলছেন, এধরনের হামলার ঘটনা, বিশেষ করে ক্রাইমিয়াতে একের পর এক বিস্ফোরণ ও হামলা, মস্কোর কর্মকর্তাদের নার্ভাস করে তুলবে।

ক্রেমলিনের প্রচারণায় জোর দিয়ে বলা হয় যে ১৯৯০-এর দশকের পর, যখন রাশিয়াতে প্রায়শই গাড়ি-বোমা হামলার ঘটনা ঘটতো, ভ্লাদিমির পুতিন এর পর দেশটিতে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছিলেন।
কিন্তু এখন খোদ রাজধানীতে এই হামলার ঘটনা ক্রেমলিনের প্রচারণাকে প্রশ্নের মুখে ছুঁড়ে দেবে- বলছেন উইল ভার্নন।
রুশ সরকারের কোনো পদে না থাকলেও মিস দুগিনার পিতা প্রেসিডেন্ট পুতিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে ধারণা করা হয়। আলেকজান্ডার দুগিনকে "পুতিনের রাসপুতিন" বলেও ডাকা হয়ে থাকে।

এই দার্শনিকের কন্যা দারিয়া দুগিনাও ছিলেন একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক যিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের সোচ্চার সমর্থক ছিলেন।

পিতা ও কন্যার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা

এবছরের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র তার ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
ত্রিশ বছর বয়সী মিস দুগিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ব্যাপারে তিনি অনলাইনে "বিভ্রান্তিকর" তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছেন।

মে মাসে তিনি একটি সাক্ষাৎকার দেন যেখানে তিনি এই যুদ্ধকে "সভ্যতার সংঘর্ষ" বলে উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয়, পশ্চিমা দেশগুলো যে তার ও তার পিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সেজন্য তিনি তার গর্বের কথাও প্রকাশ করেছিলেন।
রাশিয়ার ক্রাইমিয়া দখল করে নেওয়ার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে আলেকজান্ডার দুগিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

বিশ্ব রাজনীতির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের যে দৃষ্টিভঙ্গি তার ওপর মি. দুগিনের লেখার গভীর প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এবং উগ্র-জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ তৈরিতে তিনি একজন প্রধান বুদ্ধিজীবী হিসেবেও বিবেচিত। ক্রেমলিনের অনেক কর্মকর্তাই তার এই আদর্শ অনুসরণ করেন।

রাশিয়া যেন বিশ্বমঞ্চে নিজেকে আরো আক্রমণাত্মকভাবে জাহির করে সেজন্য আলেকজান্ডার দুগিন কয়েক বছর ধরেই মস্কোর প্রতি আহবান জানিয়ে আসছেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানেরও একজন বড় সমর্থক তিনি। 

সুত্র: বিবিসি 
 

বিভি/এসআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2