৭ ধরনের মানুষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে ওরস্যালাইন
ওরস্যালাইন বা ওআরএস (Oral Rehydration Solution) হলো ডায়রিয়া, অতিরিক্ত ঘাম বা তাপে সৃষ্ট পানিশূন্যতার অন্যতম কার্যকর প্রতিকার। এটি শরীরে তরল ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ করে এবং গ্লুকোজ, সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এটি নিয়মিত বা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করেন, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওরস্যালাইন সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে কিছু ক্ষেত্রে এটি জীবনহানির ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। জেনে নিন, কারা ওরস্যালাইন গ্রহণে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন।
১️. হাইপারনেট্রেমিয়ার ঝুঁকি
অতিরিক্ত ওআরএস গ্রহণে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গিয়ে হাইপারনেট্রেমিয়া দেখা দিতে পারে। এতে মাথাব্যথা, বমি, খিঁচুনি, এমনকি মস্তিষ্কে ফোলাভাবের মতো গুরুতর সমস্যা হতে পারে।
২️.ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা
অতিরিক্ত ওরস্যালাইন শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে হাইপারনেট্রেমিয়া বা হাইপারক্যালেমিয়া তৈরি করতে পারে। এতে ক্লান্তি, পেশি দুর্বলতা, মাথা ঘোরা ও বিভ্রান্তির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
৩️.কিডনির ওপর চাপ
ওআরএস বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে কিডনিকে অতিরিক্ত লবণ ফিল্টার করতে হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং কিডনি রোগ বা পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়।
৪️.উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে আক্রান্তদের ঝুঁকি
ওআরএসে থাকা লবণ উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতিরিক্ত গ্রহণে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, হৃদপিণ্ডে চাপ সৃষ্টি বা অন্যান্য শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
৫️. অতিরিক্ত তাপ বা খেলাধুলার সময় অপব্যবহার
অনেক ক্রীড়াবিদ গরমে বা খেলাধুলার সময় অপ্রয়োজনীয়ভাবে ওআরএস পান করেন। এটি শরীরে অতিরিক্ত ইলেকট্রোলাইট জমে পেট খারাপ, ডায়রিয়া বা ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে। প্রকৃত ডিহাইড্রেশন না হলে সাধারণ পানি বা হালকা পানীয়ই যথেষ্ট।
৬️.ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক
ওআরএসে থাকা গ্লুকোজ রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকা ব্যক্তিদের জন্য এটি বিপজ্জনক।
৭️. ওআরএসের ওপর অতিনির্ভরশীলতা
অনেকে মনে করেন ওআরএসই সব সমস্যার সমাধান, ফলে তারা ডায়রিয়া বা সংক্রমণের মতো গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসা নিতে দেরি করেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ওরস্যালাইন কখনোই চিকিৎসার বিকল্প নয়।
সতর্কতা:
যদি ওআরএস পান করার পর বমি, মাথা ঘোরা, ফোলা বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওরস্যালাইন শুধু প্রয়োজনীয় অবস্থায় ও সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলেই এটি জীবন রক্ষাকারী। কিন্তু ভুল ব্যবহারেই এটি হয়ে উঠতে পারে বিপজ্জনক।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: