কালো বিড়াল অশুভ, নাকি কুসংস্কার!

আমাদের সমাজে অনেক কুসংস্কার প্রচলিত আছে। অনেকেই কালো বিড়ালের রাস্তা পার হওয়াকে অশুভ মনে করে থাকেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে কালো বিড়াল নিয়ে ধারণা। এই ধরনের সংস্কার শুধু আমাদের দেশেই প্রচলিত নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতিতেও তা বিদ্যমান।
জার্মানিতে রাস্তার ডান দিক থেকে বাঁ দিকে কালো বিড়ালের ছুটে যাওয়াকে অশুভ মনে করা হয়। কালো বিড়াল যদি বাম থেকে ডানে রাস্তা পার হয় তবে তা শুভ লক্ষণ বলে ধরা হয়।
পশ্চিম এবং দক্ষিণ ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও এই জাতীয় বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। ১৯ শতকের জলদস্যুরা বিশ্বাস করতো, কোনো মানুষের কাছ থেকে কালো বিড়াল দূরে পালালে তা দুর্ভাগ্য দূরীভূত হওয়ার লক্ষণ। জুয়াড়িরা জুয়া খেলতে যাওয়ার পথে কালো বিড়ালের দর্শনও অশুভ বলে মনে করেন।
সাধারণভাবে মনে করা হয়, কালো বিড়াল রাস্তা পার হলে ১০ পা পিছিয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর আবার সামনে এগিয়ে যাওয়া ভালো।
যুক্তিবাদীদের বক্তব্য, কুসংস্কার নয়। বিড়ালের রাস্তা কাটা এবং গাড়ি থামিয়ে দেওয়ার মধ্যে যুক্তি রয়েছে সামাজিক। তাঁদের বক্তব্য, রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার অথবা হেঁটে যাওয়ার সময় কোনো বিড়াল রাস্তা পার হলে, তখন গাড়ি বা মানুষ দাঁড়িয়ে পড়ে। তার প্রকৃত কারণ হিসেবে ধরা হয় যে, সাধারণত, বিড়াল জাতীয় প্রাণীদের অন্য বড় আকৃতির পশুরা তাড়া করে। সেক্ষেত্রে বিড়ালকে দেখার পর একটু দাঁড়িয়ে গেলেই ভালো হয়। তাহলে বিপদের সম্ভাবনা কম থাকে। এছাড়া যুক্তিবাদীদের মতে, সাধারণত কালো রঙকে অশুভ প্রতীক হিসাবে হিন্দু ধর্মে গণ্য করা হয়৷ সেই কুসংস্কার থেকেই কালো বিড়ালকেও অশুভ শক্তির প্রতীক হিসাবে গণ্য করা হয় আমাদের সমাজে।
জীববিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করেন, এই সমস্ত বিশ্বাসের বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। কোনো কোনো প্রাণী আসন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আভাস পেয়ে থাকে। কিন্তু ব্যক্তি বিশেষের দুর্ভাগ্যের সংগে বিড়াল বা অন্য প্রাণীর যোগ রয়েছে বলে বিশ্বাস করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।
বিভি/এএন
মন্তব্য করুন: